মিউজিয়ামে রূপান্তরিত হতে চলেছে বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী যামিনী রায়ের দক্ষিণ কলকাতার বসত বাড়ি
বেস্ট কলকাতা নিউজ : বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী যামিনী রায়ের নামে মিউজিয়াম হচ্ছে শহরে। বালিগঞ্জে শিল্পীর বাড়িতে গড়ে উঠবে লাইব্রেরি, গ্যালারি, কাফেটেরিয়া ইত্যাদি নিয়ে ‘স্টেট অব আর্ট’ মিউজিয়াম। এ কাজের দায়িত্বে দিল্লি আর্ট গ্যালারি। তাদের প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে রাজ্য হেরিটেজ কমিশন।এদিকে কলকাতা পুরসভা মেয়র পরিষদের বৈঠকে এই প্রস্তাবে সিলমোহর দিয়েছে। বালিগঞ্জ প্লেসের একটি গলির নাম যামিনী রায় সরণি। সেখানে ১৮/৩৯ নম্বরের ঠিকানায় মাথা তুলে দাঁড়িয়ে তিনতলা বাড়িটি। একসময় এই বাড়িতে গল্প করতে আসতেন দেশের নামকরা লেখক, কবি, চিত্রকর, শিল্পী, পরিচালক এবং রাজনীতিবিদরা। মূলত এই বাড়িতেই থাকতেন শিল্পী। অবশেষে বাড়িটি দ্রুত রূপান্তরিত হতে চলেছে মিউজিয়ামে। কলকাতা পুরসভার খাতায় বাড়িটি হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃত। তবে কোনও ‘গ্রেড’ দেওয়া হয়নি।

জানা গিয়েছে, ১৯৪৯ সালে বাগবাজারের ভাড়া বাড়ি ছেড়ে চিত্রশিল্পী যামিনী রায় দক্ষিণ কলকাতার এই বাড়িতে আসেন। চারের দশকে শিল্পী বালিগঞ্জ প্লেসের বাড়িতে থাকা শুরু করেন। তখন এই জায়গার নাম ছিল, ডিহি শ্রীরামপুর লেন। সেসময় বাড়িটি কলকাতার অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে দ্রষ্টব্য ছিল। ১৯৭২ সালে চিত্রকরের মৃত্যুর পর ক্রমে সেটির দশা বেহাল হয়। এবার বাড়িটি ঐতিহ্য ফিরে পেতে চলেছে। যামিনী রায়ের বাড়ি মিউজিয়াম করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছে দিল্লি আর্ট গ্যালারি (ডিএজি)। সংস্থার কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, মেক্সিকোতে কাসা আজুল নামে একটি জায়গা রয়েছে। সেখানে দেশ-বিদেশ থেকে ফ্রিদা কাহলোর ভক্তরা আসেন। যামিনী রায়ের এই বাড়িকে তেমনই একটি মিউজিয়াম হিসেবে সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চায় ডিএজি। তারা যামিনী রায়ের পরিবারের কাছ থেকে বাড়িটি কিনে নিয়েছে এবং সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে। পুরনো বাসিন্দারা ছাড়া এখনকার অনেকেই জানেন না যে, শিল্পী যামিনী রায় একদা এখানেই থাকতেন।
এই বাড়ির নীচের তলায় ছিল শিল্পীর স্টুডিও। সেখানেই প্রদর্শিত হবে শিল্পীর কাজকর্ম। এছাড়া বাগানে রয়েছে সেই বহু-চর্চিত আমগাছটি, যার তলায় বসে অবসর সময়ে ছবি আঁকতেন শিল্পী। সেখানে তৈরি হবে কাফে। বাড়ির উঠোনজুড়ে থাকবে শিল্পীর আঁকা ছবি। দ্বিতীয়তলায় হবে গ্যালারি। সেখানে দেশ-বিদেশের কাজ, ছবি, শিল্পকর্ম তুলে ধরার সুযোগ থাকবে। তার সঙ্গে থাকবে লাইব্রেরি। সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট (মিউজিয়ামস, ডিএজি) সুমনা চক্রবর্তী বলেন, ‘বাড়ির খোলা জায়গা ওয়ার্কশপ, লাইভ পারফরম্যান্সের জন্য ব্যবহার করা হবে।’ ডিএজি’র এমডি ও সিইও আশিস আনন্দ বলেন, ‘আমরা সেখানে একটি ‘স্টেট অব আর্ট’ ‘ওয়ার্ল্ড ক্লাস’ মিউজিয়াম ও কালচারাল সেন্টার বানাচ্ছি।’

