রাজ্যে রেকর্ড উৎপাদনের পরও কেন ডিমের দাম লাগামছাড়া ? কারণ খুঁজতে আসরে নামলো নবান্ন

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : শীতের আমেজ গায়ে মাখার আগেই বাঙালির প্রাতঃরাশ থেকে ডিনার – সর্বত্র অপরিহার্য ডিমের দামে হাত পুড়ছে আমজনতার । অথচ পরিসংখ্যানে নজর দিলে দেখা যাচ্ছে এক অদ্ভুত বৈপরীত্য । গত কয়েক বছরে রাজ্যে ডিমের উৎপাদনে কার্যত বিপ্লব ঘটেছে, হয়েছে রেকর্ড বৃদ্ধি। অর্থনীতির সাধারণ নিয়ম বলে, জোগান বাড়লে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকার কথা । কিন্তু বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে দেখা যাচ্ছে ঠিক উলটো ছবি । কেন এই অসঙ্গতি ? কেন উৎপাদনের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হওয়া সত্ত্বেও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে সাধারণের প্রোটিন ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই এবার আসরে নবান্ন । বিষয়টি খতিয়ে দেখার গুরুদায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতর এবং বাজার দর নিয়ন্ত্রণে গঠিত বিশেষ টাস্ক ফোর্সের কাঁধে ।

প্রাথমিক পর্যালোচনায় উঠে আসছে পোল্ট্রি শিল্পের এক গভীর সংকটের কথা । হাঁস-মুরগির খাদ্যের আকাশছোঁয়া মূল্যবৃদ্ধিকেই ডিমের দাম বাড়ার মূল অনুঘটক হিসেবে চিহ্নিত করছেন বিশেষজ্ঞরা । আর এখানেই উঠে আসছে এক নতুন সমীকরণ । রাজ্যে পাল্লা দিয়ে ভুট্টা চাষ বাড়লেও তার সুফল পোল্ট্রি শিল্প পুরোপুরি পাচ্ছে না । কারণ, উৎপাদিত ভুট্টার এক বিশাল অংশ চলে যাচ্ছে ইথানল তৈরির কারখানায় । জ্বালানির বিকল্প হিসেবে ইথানলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাঁস-মুরগির খাবারের জোগান শৃঙ্খলে টান পড়ছে । স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি খাবার তৈরিতে সাফল্য দেখালেও কাঁচামালের এই ঘাটতি ও মূল্যবৃদ্ধি সামগ্রিক উৎপাদন খরচকে বাড়িয়ে দিচ্ছে বহুগুণ । ফলে স্বাভাবিকভাবেই তার প্রভাব গিয়ে পড়ছে ডিমের খুচরো দরে ।

এই জটিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নবান্নে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ । বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না-সহ কৃষি, কৃষি বিপণন ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের শীর্ষ আধিকারিকরা । বৈঠকের নির্যাস বলছে, সরকার আর কালক্ষেপ করতে রাজি নয় । বর্তমানে পাইকারি বাজারে ডিমের দাম একেকটি সাত টাকা পাঁচ পয়সা ছুঁয়েছে, যা খুচরো বাজারে হাতবদল হয়ে আট টাকায় বিক্রি হচ্ছে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *