লাক্ষাদ্বীপ সরকার সওয়াল করলেন ডেয়ারি ফার্ম বন্ধ করা, নিরামিষ মিড ডে মিলের পক্ষে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : প্রফুল্ল প্যাটেলের নেতৃত্বে লাক্ষাদ্বীপ প্রশাসন কিছুদিন আগে সিদ্ধান্ত নেয়, বন্ধ করে দেওয়া হবে দু’টি ডেয়ারি ফার্ম। নিরামিষ খাদ্য দেওয়া হবে এমনকি স্কুলে মিড ডে মিলেও।আজমল আহমেদ নামে এক ব্যক্তি কেরল হাইকোর্টে জনস্বার্থের মামলা করেছিলেন এই দু’টি নির্দেশের বিরুদ্ধে। সেইমতো ২২ জুন লাক্ষাদ্বীপ প্রশাসনের দু’টি আদেশের ওপরে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্ট। মঙ্গলবার হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে লাক্ষাদ্বীপ প্রশাসন আর্জি জানাল, স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হোক।
একইসঙ্গে লাক্ষাদ্বীপ প্রশাসন দাবি জানালো, জাহাজ চলাচল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত যুক্তিসঙ্গত লাক্ষাদ্বীপ ও ম্যাঙ্গালুরুর মধ্যে। কারণ ম্যাঙ্গালুরু বন্দর লাক্ষাদ্বীপের অনেক কাছে অবস্থিত কেরলের বেপোরের তুলনায়। আরও অভিযোগ, প্রফুল্ল প্যাটেল পরিবর্তন করেছেন কোভিড বিধি। তার ফলে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে ওই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। ওই অভিযোগের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানানো হয় এদিনের হলফনামায়। তাতে বলা হয়, অনেক আগেই বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে পণ্য চলাচলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তা সত্ত্বেও কঠোর কোভিড বিধি মেনে চলেছে লাক্ষাদ্বীপ প্রশাসন। সেজন্য লাক্ষাদ্বীপ থেকে অন্যত্র পণ্য চলাচলে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ২০২০ সালের ডিসেম্বরের শেষে।
কেন্দ্রীয় সরকারের কৌঁসুলি এস মনু লাক্ষাদ্বীপ প্রশাসনের তরফে হলফনামা পেশ করে বলেন, বুদ্ধিমানের কাজ হত না দু’টি ডেয়ারি ফার্ম চালু রাখা। কারণ বছরে ৯০ লক্ষ টাকার বেশি লোকসান হয় ওই দু’টি ফার্মে। মাত্র ৩৪ টি পশু আছে কাভারাত্তি ও মিনিকয় নামে ওই দু’টি ফার্মে। রোজ সেখানে মাত্র উত্পাদন হয় ১৭০ লিটার দুধ। ২০২০-‘২১ সালে দু’টি ফার্মের লোকসানের অঙ্ক ছিল ৯২ লক্ষ ৫৮ হাজার ১৮৪ টাকা। দু’টি দ্বীপের মোট ২০ হাজার জনসংখ্যার মধ্যে মাত্র ৩০০-৪০০ মানুষ দুধ কেনেন ওই দু’টি ডেয়ারি থেকে।
আজমল আহমেদ হাইকোর্টে আরও বলেছিলেন, পশুপালন করে জীবিকা অর্জন করেন লাক্ষাদ্বীপের বাসিন্দাদের এক বড় অংশ। সরকারি এফিডেবিটে এদিন বলা হয়, সত্যি নয় এই বক্তব্য। কারণ লাক্ষাদ্বীপ বিচ্ছিন্ন জায়গা ভৌগোলিক দিক থেকেও। সেখানে তৃণভূমি নেই যথেষ্ট পরিমাণেও। হলফনামায় উল্লেখ করা হয়, মিড ডে মিলের মেনু থেকে মাংস বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল জানুয়ারিতে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির জন্য যে স্টিয়ারিং ও মনিটরিং কমিটি আছে, ওই সিদ্ধান্ত নেয় তারাই। সেই বৈঠকে প্রফুল্ল প্যাটেল উপস্থিত ছিলেন না। সুতরাং যে অভিযোগ উঠেছে লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসক মিড ডে মিলের মেনু পরিবর্তন করতে চাইছেন বলে, তা সত্য নয়।