সবচেয়ে বড় সোনার ভাণ্ডার রয়েছে ভারতের এই গুহাতেই! এমনকি দরজা খোলেনি রহস্যে মোড়া গুহায় কামান দেগেও
বেস্ট কলকাতা নিউজ : এযেন ঠিক যেন আলিবাবা ও চল্লিশ চোরের গল্প।তবে এটি কোনো গল্প নয়, কঠোর বাস্তব।ভারতে এমন অনেক স্থান রয়েছে আজও রহস্যে মোড়া যার ইতিহাস।সুপ্রাচীন এই সভ্যতার পরতে পরতে লুকিয়ে আছে কত অজানা গল্প। সময়ের সঙ্গে খোয়া গিয়েছে অনেক কিছু, তেমনই থেকেও গিয়েছে অনেক কিছু। তেমনই এক রহস্যময় স্থান বিহারের নালন্দার ‘সোনে ভান্ডার’ বা সোনার ভান্ডার। রাজগীরের এই সোনার ভাণ্ডার সম্পর্কে কথিত আছে যে এই ভাণ্ডারে তার সোনা লুকিয়ে রেখেছিলেন হর্যক রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা বিম্বিসারের স্ত্রী , আজও যা লোকচক্ষুর আড়ালে।
আজ পর্যন্ত কেউ এই গুপ্তধনের কাছে পৌঁছাতে পারেনি। ঐতিহাসিকদের মতে, সোনা-রুপোর প্রতি প্রবল আসক্তি ছিল হর্যক রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা বিম্বিসারের। তিনি সোনার অলঙ্কার সংগ্রহ করতে ভালবাসতেন। বিহারের এই গুহাতেই নাকি সেই বিপুল সোনা-রুপোর ভাণ্ডার লুকানো আছে। এমনকি একবার ব্রিটিশরা এই গুহার ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল বটে, কিন্তু তারা তাতে সফল হতে পারেনি।
সম্রাট বিম্বিসারের স্ত্রী এই গুহার নির্মাণ করেন, ইতিহাসবিদদের এমনটাই অনুমান । আসলে সম্রাট বিম্বিসারের অনেক রানি ছিল। তাঁদের মধ্যেই একজন রাখতেন রাজার সোনা রুপোর প্রতি এমন সোহাগের বিশেষ খেয়াল। বিম্বিসার যখন নিজের পুত্র অজাতশত্রুর হাতে বন্দি হলেন, সেই সময় রানি রাজগীরে এই গুহা বানান। রাজার বিপুল সোনার ভাণ্ডার গুহার অন্দরে লুকিয়ে রাখেন।
সোনা ভান্ডার গুহায় প্রবেশের সময় ১০.৪ মিটার দীর্ঘ এবং ৫.২ মিটার চওড়া একটি কক্ষ রয়েছে। এই ঘরের উচ্চতা প্রায় ১.৫ মিটার।এই কক্ষটি রাজকোষ পাহারাদেওয়ার সৈন্যদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এই কক্ষের অপর পাশে রয়েছে গুপ্তধন ঘর, যা একটি বড় পাথর দ্বারা আবৃত।গুহায় একইরকম দেখতে বেশ বড়ো দুটি ঘর। সৈন্যরা একটি গুহায় থাকতো আর অন্যটিতে গুপ্তধন লুকিয়ে রাখা ছিল।
এই গুপ্তধনের ঘরটি একটি বিরাট বড়ো শিলা দ্বারা আবৃত, যা এখনও পর্যন্ত খোলা যায়নি। শিলার ওপর আছে এক রহস্যময় লিপিদরজায় ওপর রাখা এই শিলার গায়ে আছে এক শঙ্খলিপি, কথিত আছে এই শঙ্খলিপিতেই নাকি দেওয়া গুপ্তধনের দরজা খোলার হদিশ। কিন্তু আজও খোলা যায়নি গুহার এই দরজা। ঐতিহাসিক থেকে শুরু করে বিজ্ঞানী, সকলের কাছেই আজও পুরো বিষয়টাই যেন এক ধাঁধা।
রাজগীরে মানবসৃষ্ট প্রাচীন গুহা রয়েছে। এর মধ্যে একটির বাইরে মৌর্য্য নিদর্শন পাওয়া গেছে, অন্যটির প্রবেশপথে গুপ্ত রাজবংশের ভাষা বা চিহ্নের শিলালিপি পাওয়া গেছে।ঐতিহাসিক নথিগুলি বলে যে এই গুহাগুলি খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে ‘জৈন মুনি’ তৈরি করেছিলেন। এখানে ওপারে নির্মিত গুহায় ৬ জন জৈন ধর্মের তীর্থঙ্করের মূর্তিও পাথরে খোদাই করা আছে। এ থেকে স্পষ্ট যে এখানে জৈন ধর্মের অনুসারীরাও বাস করতেন।এই গুহাগুলির বাইরে পাওয়া ভগবান বিষ্ণুর মূর্তি এবং জৈন প্রত্নবস্তুগুলি হিন্দু ও জৈন ধর্মের সঙ্গে যুক্ত। আবার কিছু ঐতিহাসিকদের অনুমান এগুলি বৌদ্ধ ধর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত।