হাসছে পাহাড় হাসছে সিকিম , পর্যটকদের ঢল নেমেছে পাহাড়ে
নিজস্ব সংবাদদাতা: দুর্যোগের আশঙ্কা দূর। ভারী বর্ষণের সতর্কতা উড়িয়ে মনোরম হাওয়ার পূর্বাভাসও মিলছে। মেঘ-রোদের লুকোচুরির মাঝে কয়েকদিনের বিরতিতে হাসি ফিরেছে কাঞ্চনজঙ্ঘায়। মহাপঞ্চমীর ভিড় দেখে হাসি ফিরছে পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল ব্যবসায়ীদের মুখেও। কেননা, পুজোকে কেন্দ্র করে শৈলরানিতে পা রাখা শুরু হয়েছে পর্যটকদের। সময়ের সঙ্গে কালো মাথার ভিড় আরও বাড়বে, নিশ্চিত পর্যটন মহল।
আস্তাবলে আর আটকে নেই ঘোড়াগুলি। সাতসকালেই ম্যালে হাজির সাদা-কালো, বিভিন্ন রংয়ের ঘোড়া। সময়ের সঙ্গে ম্যালে ভিড় বেড়েছে পর্যটকদের। সওয়ারি পেয়েছে ঘোড়াগুলি। শুরু হয়েছে মহাকাল মন্দিরের রোড ধরে রাজভবনকে ডানদিকে রেখে চক্কর। সকাল ডিঙিয়ে ঘড়ির কাঁটা যত দুপুরের দিকে গড়িয়েছে, মোটরস্ট্যান্ড, চকবাজার, চৌরাস্তায় বেড়েছে ভিড়। বাঙালি মুখের সংখ্যাই বেশি। ভিনরাজ্যের বাসিন্দারা যে একেবারে নেই, তা নয়। তবে অন্য বছরের তুলনায় অনেকটাই কম।
বিজনবাড়ি থেকে সিটং, লোলেগাঁও থেকে কোলাখাম, হোমস্টেগুলিতেও ভিড়টা মন্দ নয়। ষষ্ঠী থেকে দশমী, ভিড়টা আরও বাড়বে, মনে করছেন স্থানীয় হোমস্টেগুলির কর্ণধাররা। শুধু দার্জিলিং বা কালিম্পং নয়, দেরিতে হলেও কিছু মানুষ সিকিমমুখী হয়েছেন। কেউ রাবাংলা, কেউ আবার গ্যাংটকের পাশাপাশি পেলিং, নামচির মতো জায়গাগুলি বেছে নিয়েছেন।
দিনের পর দিন ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বেহাল হয়ে থাকা, প্রবল বর্ষণ এবং পুজোর সময় দুর্যোগের আশঙ্কা, সবমিলিয়ে এবারের পুজো-পর্যটন কার্যত চলে গিয়েছিল খাদের কিনারায়। হোটেল বুকিংয়ের হার দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু পুজোয় পাহাড় থেকে কী দূরে থাকা যায়, বার্তা দেওয়া শুরু করে দিয়েছেন পর্যটকরা। ‘হয়তো গত কয়েক বছরের তুলনায় কম, কিন্তু যতটা খারাপ হবে ভাবা হয়েছিল, ততটা নয়’, বললেন দার্জিলিং চকবাজারের ব্যবসায়ী সুরজ প্রধান।
এবছর ফ্লাইং ট্যুরিস্ট বেশি, বললেন কালিম্পং হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিদ্ধান্ত সুদ। তাঁর বক্তব্য, ‘এদিন প্রচুর পর্যটক হোটেলে এসে ঘরের খোঁজ করেছেন। তাতে বোঝা যাচ্ছে বুকিং না করে আবহাওয়া এবং পাহাড় পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েই তাঁরা বেড়াতে এসেছেন।’
একই বক্তব্য পাওয়া গেল বিজনবাড়ির একটি হোমস্টের কর্ণধার প্রেক্ষা শর্মার কাছে। কোলাখাম হোমস্টে ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অনিল গুরুংয়ের বক্তব্য, ‘সাধারণত বুক করেই পর্যটকরা বেড়াতে আসেন। কিন্তু এবছর অনেকেই বেড়াতে এসে ঘরের খোঁজ করছেন। আশা করছি বুধ-বৃহস্পতিবার আরও লোক আসবে।’ এখন নতুন করে কিছু বুকিং হচ্ছে বলে জানালেন সিকিমের হোটেল ব্যবসায়ী কল্পক দে। হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলছেন, ‘১০ নম্বর জাতীয় সড়ক সহ অন্য রাস্তাগুলি ভালো হয়েছে। আবহাওয়াও রয়েছে অনুকূল। যে কারণে পর্যটকরা আসছেন। আশা করছি, দীপাবলি পর্যন্ত পাহাড়ি পর্যটন সুখদায়ক হবে।’