মূল্যবৃদ্ধির অভিনব প্রতিবাদ শিব সেজে, পুলিশ তুলে নিয়ে গেল বহুরূপীকে , রেগে লাল এমনকি মুখ্যমন্ত্রীও
বেস্ট কলকাতা নিউজ : এক বহুরূপী অভিনব প্রতিবাদ করেছিলেন মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে । এমনকি তিনি পথনাটিকা করেছিলেন শিব সেজে বাইক চালিয়ে। কিন্তু পুলিশ বহুরূপীকে আটক করে সেটাকেই ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের নাম দিয়ে। তবে একদিন পর তাঁকে ছেড়েও দেওয়া হয়। সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, এই ঘটনায় পুলিশকে একহাত নিয়েছেন খোদ অসমের মুখ্যমন্ত্রী। যে কেউ প্রতিবাদ করতে পারেন, তাই বলে তাকে আটক করাকে মুখ্যমন্ত্রী সমর্থন করেননি।
নগাঁওয়ের বিরিঞ্চি বোরা পেশায় একজন সমাজকর্মীও বটে । ননৈ গ্রামে পুলিশ তাঁকে আটক করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং যুবা মোর্চার অভিযোগে। এর পর তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয় নগাঁও থানায় । পুলিশ মামলা রুজু করে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫ এ ধারায়। এমনকি অভিযোগ ওঠে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতেরও।
বিরিঞ্চি একরাত কাটান থানার লকআপে। তবে রবিবার পুলিশ একটি নোটিস দিয়ে তাঁকে ছেড়ে দেয় । নগাঁওয়ের পুলিশ সুপার লীনা দোলে জানিয়েছেন, পরে থানায় হাজিরা দিতে বলা হয়েছে তাঁকে । প্রসঙ্গত, বিরিঞ্চি শিব সেজেছিলেন পথনাটিকায় । তাঁর সঙ্গে পার্বতী সেজে এক যুবতী বাইকে চড়ে যাচ্ছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, পার্বতীর সঙ্গে তাঁর জোর ঝগড়া হয় বাইকের তেল ফুরিয়ে যাওয়ায়। কারণ শিব তাঁকে বলেন, তিনি বাইকে পেট্রল ভরাতে পারছেন না লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধির কোপে।
আদতে বিরিঞ্চি মূল্যবৃদ্ধির জেরে মধ্যবিত্তের নাভিশ্বাস অবস্থা দেখাতে চেয়েছিলেন এই পথনাটিকার মধ্যে দিয়ে । তিনি এও বলেন, “কারও ভাবাবেগে আঘাত দেওয়ার উদ্দেশ্য তার ছিল না। আমি এই রূপক ব্যবহার করি এটা বোঝাতে যে মূল্যবৃদ্ধি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে স্বয়ং ঈশ্বরও বেলাগাম মূল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল হতেন মর্ত্যে থাকলে।”
উল্লেখ্য, এই খবর চাউর হতেই অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানান, “মোটেও ধর্ম অবমাননা নয় সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে পথনাটিকা । অন্যায় নয় পথনাটিকায় দেব-দেবীর মতো সাজও। যদি না আপত্তিকর মন্তব্য বা জিনিস ব্যবহার করা হয়। নগাঁও পুলিশকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।” এদিকে, অভিযোগকারী যুবা মোর্চার নেতা অনুপম বোরা বলেছেন, “ আমাদের কোনও আপত্তি নেই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে তাতে। কিন্তু প্রতিবাদের জন্য ঈশ্বরকে ব্যবহার করা ভুল।”