বাম-বিজেপি-তৃণমূল ‘জোটবদ্ধ’ শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য, সৌভ্রাতৃত্বের নির্বাচনী লড়াই বাংলার এই গ্রামে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : গ্রামীণ সংসদের ভোট মানেই যেন উদ্বেগ, অশান্তি, খুন, জখম, ঘরছাড়া। তবে রাজ্যের এ এক অন্য পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাহিনী। এখানে হিংসা, দ্বেষ, অশান্তিকে পকেটে পুড়েই জোরদার চলছে ভোটের লড়াই। ভোটের দুদিন নিজ নিজ দলের হয়ে ময়দানে থাকলেও ভোট মিটতেই আবার একসঙ্গে আড্ডা, এক ঠোঙায় মুড়ি খাওয়া। এখন একই দেওয়ালে তৃণমূল, বিজেপি ও সিপিএমের প্রচার। এ যেন পাশাপাশি থেকে সুষ্ঠু রাজনৈতিক লড়াইয়ের বড় দৃষ্টান্ত। গ্রামে গ্রামে শান্তি রক্ষা ও সৌভ্রাতৃত্বের লড়াইতে সামিল তৃণমূল, বিজেপি ও সিপিএম।
সূর্য সবে ঢলে পড়েছে। বাঁকুড়ার মুকুটমনিপুরের প্রায় শুকিয়ে যাওয়া জলাধারের দিকেও এখন মানুষের টান নেই। প্রায় শুনশান। গ্রামের হালহকিকত জিজ্ঞেস করতেই ফুলমণি হাঁসদা বলেন, ‘এখানে কোনও অশান্তি নেই। প্রার্থীরা যে যাঁর মতো প্রচার করছে।’
ভোট নিয়ে গ্রামে কোনও ঝঞ্ঝাট নেই জানিয়ে দিলেন টুডুলাল হাঁসদা, নির্মল মুর্মুরাও। গ্রামে কংক্রিটের রাস্তা, পানীয় জলের সরবরাহ যেমন আছে পাশাপাশি মাটির রাস্তা, আবাস যোজনার বাড়ি না পাওয়া নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে। এতদ সত্বেও গ্রামবাসীদের প্রত্যেকের মুখেই শান্তির বার্তা। নির্বাচন নিয়ে কারও চোখে-মুখে বিন্দুমাত্র উদ্বেগ নেই। বরং এমন প্রশ্ন শুনেই তাঁরা হতবাক। গ্রামবাসীরা ভাবতেই পারছে না কোচবিহার, ভাঙড়ের হিংসার কথা।
মনোনয়ন পর্ব থেকে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত রাজনৈতিক হিংসায় ১৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ভাঙড় থেকে কোচবিহার রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়েছে। রক্তস্নাত পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে সোচ্চার হয়েছে বিরোধীরা। ভোট রাজনীতিতে অশান্তির, হানাহানির মধ্যে একটু হলেও মন ভালো হওয়ার খবর আদিবাসী অধ্যুষিত জঙ্গলমহলে। বাঁকুড়ায় খাতড়ার গোড়াবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের চিত্রটা কিন্তু অনেকটা ভিন্ন। এখানে এক যোগে শান্তির সুরে গলা মেলাচ্ছেন তৃণমূল, সিপিএম ও বিজেপি নেতৃত্ব। ভোটের লড়াই যে অশান্তির পর্যায়ে যাবে না তা নিয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে গ্রামবাসীরাও।