তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারই দায়ী’‘টাটা চলে যাওয়ার জন্য , সিঙ্গুরের ‘মাস্টারমশাইয়ে’র সুর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষেই
বেস্ট কলকাতা নিউজ : গত বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তারপরই সিঙ্গুর আন্দোলন নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। জমি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকা সিঙ্গুরের ‘মাস্টারমশাই’ রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য সে সময়ে সিঙ্গুর থেকে টাটা গোষ্ঠীর বিদায় নিয়ে তৎকালীন বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনের আন্দোলনকেই দায়ী করেছিলেন। আবার শিরোনামে সেই প্রসঙ্গ। তবে এবার প্রায় ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন তিনি। এবার বললেন, “টাটা সিঙ্গুর ছেড়ে চলে যাক, এটা কখনই চাইনি।” সঙ্গে এটাও বললেন, “টাটা চলে যাওয়ায় জন্য সিঙ্গুর-সহ রাজ্যের ক্ষতি হলেও তার জন্য বর্তমান সরকার দায়ী নয়। যদি কেউ দায়ী হয়ে থাকে তাহলে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার।” টাটা চলে যাওয়ার জন্য আন্দোলন কিছুটা দায়ী বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৫ বছর পর নতুন করে সিঙ্গুরে ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। সিঙ্গুরে কারখানা না হওয়ায় টাটাকে সুদসহ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড’ বা -কে। টাটার পক্ষে সর্বসম্মত রায় দিয়েছে মধ্যস্থতাকারী ট্রাইবুনাল। ফলে নতুন করে চর্চায় এসেছে সিঙ্গুর আন্দোলন। এপ্রসঙ্গে সিঙ্গুরের মাস্টারমশাইয়ের বক্তব্য, “আমরা সিঙ্গুর আন্দোলনকারী হিসাবে তখন চেয়েছিলাম ৬০০ একর ছবিতে টাটাদের কারখানা হোক। বাকি জমি কৃষকদের ফেরত দেওয়া হোক।” তাঁর আরও বক্তব্য, তৎকালীন রাজ্যপালের কাছে চুক্তি হলেও পরবর্তীকালে সেই চুক্তি অগ্রাহ্য করে তৎকালীন সরকার। ফলে নতুন করে আন্দোলন শুরু হয়।
তবে রবীন্দ্রনাথ আরও বলেন, “ট্রাইবুনালের যে রায় টাটাদের দিক থেকে তা যুক্তিসঙ্গত কারণ তাদের প্রভূত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু সেই দাবি রাজ্য সরকার মানবে কিনা সেটা সম্পূর্ণ সরকারের ব্যাপার। কারণ বর্তমান সরকার বা বর্তমান শাসক দলের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই । এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরকার আদালতেও যেতে পারে বিষয়টা সম্পূর্ণ বর্তমান রাজ্য সরকারের ব্যাপার।”
অথচ রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য একুশের নির্বাচনের আগে যে সময়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তখন সাংবাদিকদের সামনে এক সাক্ষাৎকারে সিঙ্গুর আন্দোলন প্রসঙ্গেই বলেছিলেন, ” টাটা চলে গিয়েছে সিঙ্গুর আন্দোলনের ফলেই। টাটার কাছে এই প্রস্তাব না যাওয়ায় তারা কী করে বুঝবে সমঝোতা হয়েছে? ফলে তার প্রত্যাখ্যান বা গ্রহণ কোনও প্রশ্নই আসেনি।” যদিও তৎকালীন বিরোধী নেত্রী তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই দাবি করেছেন, “আমি টাটাকে তাড়াইনি। সিপিএম তাড়িয়েছে। ওরা জোর করে জমি নিতে গিয়েছিল। আমরা ফিরিয়েছি।” এতদিন পর আবারও রবীন্দ্রনাথের গলায় ফিরল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের প্রতি সমর্থন।