বাংলার এ তল্লাটের মহিলারাও ফের গর্জে উঠছেন সন্দেশখালির পথ ধরেই ! উঠছে ভয়ঙ্কর সব অভিযোগও
বেস্ট কলকাতা নিউজ : অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে লাড়ইয়ের পথ দেখিয়েছে সন্দেশখালির মহিলারা। ঠিক সেই পথেই এবার আর্থিক দুর্নীতি ও জচ্চুরির বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বহু মহিলা। সন্দেশখালির মতই তাদেরও নিশানায় শাসক দলের নেতা ও প্রশাসনের কর্তারা। শুধু গর্জে ওঠাই নয়,দুর্নীতি, জচ্চুরি ও বঞ্চনার কথা লেখা পোস্টার হাতে নিয়ে পথেও নেমে বৃহত্ত্বর লড়াইয়ে ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আর তাতেই লোকসভা ভোটের মুখে সিঁদুরে মেঘ দখছে শাসক দলের নেতৃত্ব।
স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরিতে ‘দেশের সেরা’ স্বীকৃতি পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। ন্যাশনাল রুরাল লাইভলিহুড মিশনের বিচারে বাংলার এই শিরোপা পাওয়ার কথা গর্বের সঙ্গে অনেক আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন। আর এখন লোকসভা ভোটের মুখে জামালপুরের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আনা অভিযোগে সেই গর্বই যেন চুরমার হতে বসেছে।
একাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের আনা অভিযোগ যথেষ্ট চমকে দেওয়ার মতোই। আন্দোলনকারীরা প্রায় দু’বছর ধরে ব্লক প্রশাসন, ব্লক তৃণমূলের সভাপতি,পঞ্চায়েতের প্রধান,উপ-প্রধান সহ লেডি গ্রাম সেবিকার (lGS) বিরুদ্ধে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অনিয়মে মদত দেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন। ন্যায় বিচার চেয়ে তারা জেলা প্রশাসনের নানা মহলে বহু আবেদন নিবেদনও করেছেন। আন্দেলনে অংশ নেওয়া স্বনির্ভর গোষ্ঠীর একজন বলেন, ‘সুবিচার পাওয়ার জন্যে শুধু দিন গুনে যাওয়া আর মানতে পারছি না। তাই বিচার পেতে সন্দেশখালির মহিলাদের মতই আন্দোলনে নামার পথ বেছে নিচ্ছি।’
কোটি কোটি টাকা অর্থ আত্মসাৎ ও নানা অনিয়ম বিষয়ে লেখা পোস্টার হাতে নিয়ে আন্দোলনকারীরা শুরুতে জামালপুরের পুলমাথা এলাকায় জড়ো হন। সেখান থেকে মিছিল করে এসে তারা পৌঁছান জামালপুর থানার কাছে সিধু কানুর মূর্তির সামনে। সেখানে বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নেত্রীরা তাঁদের বক্তব্যের মাধ্যমে ব্লকের শাসক দলের নেতা থেকে ব্লক প্রশাসনের কর্তা ও লেডি গ্রাম সেবিকার কার্যত তুলোধনা করেন।
আন্দোলনের অন্যতম মুখ মীরাতাজ বেগম বলেন, ‘স্বনির্ভর গোষ্ঠী খোলার মূল উদ্দেশ্যটাই এখন কার্যত ব্যর্থ। এখন শাসক দলের নেতাদের কাছে অর্থ লুটের মাধ্যম হয়ে উঠেছে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। মীরাতাজ দাবি করেন, তিনি হলেন স্বনির্ভর গোষ্ঠী নারী চেতনা মহিলা মাল্টি পারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির\ আসল নেত্রী। কিন্তু গোষ্ঠীর অর্থ লুটের পথ সুগম করতে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মেহেমুদ খাঁন অন্য একজনকে নারী চেতনা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নেত্রী সাজিয়েছেন। একই রকম অন্যায় কাজ আরও বেশ কয়েকটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গেও করা হয়েছে। প্রশাসন এসবের কোন বিহিত না করায় জামালপুরের বেশ কয়েকটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাজ কর্ম লাটে উঠেছে। ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অফিসেও তাই এখন তালা ঝুলছে।’
মীরাতাজের আরও অভিযোগ, ‘স্কুল ড্রেস তৈরির নামে কোটি কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে জামালপুরে। সেলাইয়ের ট্রেনিং সম্পূর্ণ করা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের দিয়ে স্কুল ড্রেস তৈরি করানোর নির্দেশ থাকলেও তা মানা হয়নি। সুতির বদলে টেরিকটের নিম্নমানের স্কুল ড্রেস ঘুর পথে আমদানি করে সেগুলি স্কুলে স্কুলে দেওয়া হয়েছে।