এনএমসির জরিমানা একাধিক মেডিক্যাল কলেজকে, এবার কি কোপ পড়বে সিটেও ?
বেস্ট কলকাতা নিউজ : লক্ষ লক্ষ টাকার জরিমানা না দিলে রাজ্যের ২৩টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদিত আসন কমানোর হুঁশিয়ারি ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন বা এনএমসি-এর (NMC)। পরিকাঠামো ও বায়োমেট্রিক হাজিরা নিয়ে সন্দিহান কমিশন। আসন বাঁচাতে স্বাস্থ্য ভবনের পরামর্শ মেনে এনএমসি-এর কাছে আর্জি জানিয়েছিল রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলি। রাজ্যের আর্জিতে পাত্তাই দিল না এনএমসি। উল্টে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে মেডিক্যাল কলেজগুলির নিয়ন্ত্রক সংস্থা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, জরিমানা দিতেই হবে। জরিমানা মকুবের আর্জি জানাতে হলে তার জন্যও ৫০ হাজার টাকা দিয়ে আবেদন করতে হবে। প্রশ্ন উঠছে, কেন্দ্রীয় কমিশনের রোষানলে কি এবার রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্র?
সরকারি চিকিৎসকদের তলানিতে বায়োমেট্রিক হাজিরা। মেডিক্যাল কলেজগুলিতে আদৌ ক্লাস নিচ্ছেন শিক্ষক-চিকিৎসকেরা, এ বিষয়ে সন্দিহান কমিশন। বায়োমেট্রিক হাজিরা তথ্যেও সন্দিহান তারা। ছাত্র সংখ্যার নিরিখে পর্যাপ্ত চিকিৎসক রয়েছে কি না সে প্রশ্নও উঠেছে।
যদিও রাজ্যের যুক্তি, বায়োমেট্রিক হাজিরার পরিকাঠামো সময়ে গড়া যায়নি। ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শেষ সময়সীমা ছিল। এনএমসি-এর পাল্টা দাবি, গত বছর থেকে বারবার স্বাস্থ্য ভবনকে সতর্ক করা হয়েছে। তারপর কেন বায়োমেট্রিক হাজিরার পরিকাঠামোয় অমিল থাকবে? প্রশ্ন, পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি নাকি পর্যাপ্ত শিক্ষক-চিকিৎসকের ঘাটতি।
এনএমসি-এর জরিমানা নিয়ে সোমবার বৈঠক করেন স্বাস্থ্যসচিব। অধ্যক্ষদের ৫০ হাজার টাকা দিয়ে জরিমানা মকুবের আর্জি জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। অধ্যক্ষদের বক্তব্য, আবেদন জানালেই জরিমানা মকুবের নিশ্চয়তা কোথায়? তৃণমূল মুখপাত্র চিকিৎসক শান্তনু সেনের কথায়, “মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়াকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে বিজেপির সরকার জোর করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন তৈরি করেছিল। কিন্তু এই কমিশন আদ্যপ্রান্ত দুর্নীতিতে ডুবে। কাজই করতে পারে না ঠিক করে। কবে নিট-পিজি হবে, কবে কী হবে সেটা বলতে পারছে না। এদিক বাংলার প্রতি বঞ্চনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেখছি।”
এ বিষয়ে প্রাক্তন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বলেন, “জরিমানা দিয়ে পরে অনুমতি দিয়ে দেওয়া, এই জরিমানাতেই আমার আপত্তি। এতে কোয়ালিটি কম্প্রোমাইজ হচ্ছে। লোকে বেরিয়ে যাচ্ছে। প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ত টাকা দিতে পারবে, সরকার সবসময় দিতে পারবে না। সেক্ষেত্রে প্রাইভেটগুলো এগিয়ে যাবে। এত টাকা জরিমানার কোনও মানে নেই। যে ঘাটতি, সেটা কি জরিমানায় মিটে যাচ্ছে? হচ্ছে না তো। দরকার হলে একটু সময় দেওয়া দরকার সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এত সিট বাড়ায় প্রাথমিকভাবে শিক্ষকদের একটা ঘাটতি হচ্ছে। এত বছরের কলেজ সিটও কমিয়ে দেওয়া যায় না এভাবে।” একইসঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, নভেম্বর থেকে বহু প্রোমোশন আটকে আছে। সেগুলি দেওয়া হলে চিকিৎসক ঘাটতিও মিটতে পারত।
কোন মেডিক্যাল কলেজকে কত জরিমানা*
এসএসকেএমকে ১৮ লক্ষ টাকা
কলকাতা মেডিক্যালকে ২০ লক্ষ টাকা
এনআরএসকে ২৪ লক্ষ টাকা
সাগর দত্তকে ১২ লক্ষ টাকা
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজকে ১৫ লক্ষ টাকা
কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজকে ১২ লক্ষ টাকা
প্রফুল্ল চন্দ্র সেন মেডিক্যাল কলেজকে ১২ লক্ষ টাকা
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজকে ১২ লক্ষ টাকা
রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজকে ১২ লক্ষ টাকা
ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজকে ২ লক্ষ টাকা