মণিপুরে মুক্ত চলাচলের নির্দেশ ১৮ মাসের সংঘর্ষের পর, আদিবাসী গোষ্ঠীর চরম বিরোধিতার মুখে পড়লো সরকার
বেস্ট কলকাতা নিউজ : মণিপুরে প্রায় দীর্ঘ ১৮ মাসের হিংসা ও সংঘর্ষের পরে, অবশেষে একটি আশার আলো দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে ৮ মার্চ থেকে রাজ্য জুড়ে মুক্ত চলাচল পুনরায় চালু করা হবে। তবে, এই পথে অনেক বাধা রয়েছে, কারণ পাহাড়ি জেলার জন্য পৃথক প্রশাসনের দাবি জানিয়ে আদিবাসী গোষ্ঠীগুলি এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে।
১ মার্চ মণিপুরের গভর্নর অজয় ভল্লার সঙ্গে শাহের বৈঠকের পরে, কেন্দ্রীয় কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তাঁরা যেন ৮ মার্চ থেকে সমস্ত পথে মুক্ত চলাচল নিশ্চিত করে এবং যারা বাধা দেবে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়। এরই মধ্যে ইম্ফলে নিরাপত্তা সংস্থাগুলি একাধিক বৈঠক করেছে, যেখানে মূলত উপত্যকা ও পাহাড়ি এলাকার মধ্যে চলাচল পুনরুদ্ধারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ইম্ফল ও নাগাল্যান্ডের মধ্যে সংযোগকারী জাতীয় সড়ক ২-এ পণ্যবাহী ও বাণিজ্যিক যানবাহনের চলাচল শুরু হবে। এই পথটি কুকি-জো আদিবাসী অধ্যুষিত কাংপোকপি জেলা হয়ে সেনাপতি জেলার নাগা-অধ্যুষিত এলাকায় প্রবেশ করে।

জাতীয় সড়ক ৩৭-ও গুরুত্বপূর্ণ, যা ইম্ফল থেকে অসমের জিরিবাম পর্যন্ত যায়। যদিও এই রাস্তা হিংসার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল, গত এক মাসে কোনো নতুন হিংসার ঘটনা ঘটেনি যদিও। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সরাসরি নজরদারির ফলে এখন উপত্যকা ও পাহাড়ি এলাকার মধ্যে চলাচলের দীর্ঘদিনের বাধা দূর হতে চলেছে। তবে, সরকারের এই প্রচেষ্টার বিরোধিতা করে আদিবাসী গোষ্ঠীগুলি জানিয়েছে যে, পৃথক প্রশাসনের দাবি না মিটলে চলাচল পুনরায় শুরু করতে দেওয়া হবে না। কমিটি অন ট্রাইবাল ইউনিটি কেন্দ্রকে একটি আট দফা প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে তাঁদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়াও, ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস’ ফোরাম (ITLF) পাহাড়ি অঞ্চলগুলিকে পৃথক প্রশাসন বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার দাবি জানিয়েছে।
অন্যদিকে, উপত্যকাভিত্তিক মৈতেই গোষ্ঠীগুলি এই দাবির বিরোধিতা করেছে। কোঅর্ডিনেশন কমিটি অন মণিপুর ইন্টিগ্রিটি এবং মৈতেই হেরিটেজ সোসাইটি এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানিয়েছে যে, এটি মণিপুরকে বিভক্ত করার একটি দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার অংশ। এছাড়াও, ফেডারেশন অফ সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশন্স অফ মণিপুর ৮ মার্চ “March to the Hills” কর্মসূচির ঘোষণা করেছে, যা আদিবাসী গোষ্ঠীগুলির বিরোধিতার মুখে পড়েছে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের তরফ থেকে গভর্নর অজয় ভল্লার কাছে একটি স্মারকলিপি পাঠানো হয়েছে, যেখানে এই পদক্ষেপকে “মৈতেই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ” বলে অভিহিত করা হয়েছে।
x