নদীঅববাহিকা থেকে অনবরত মাটি তোলায় ক্রমশ ভাঙনের আশংকা বাড়ছে চাপড়ায়
বেস্ট কলকাতা নিউজ : ইটভাটাই বদলে দিচ্ছে জলঙ্গি নদীর গতিপথ। সৌজন্যে, সারাবছর ধরে নদীর বুক থেকে দেদার মাটি কেটে তুলে নেওয়া। আর অবৈধভাবে কাটা মাটি দিয়েই ভাটায় ইট তৈরি হচ্ছে। যার ফলে প্রতিনিয়ত জলঙ্গি নদীর অববাহিকা চওড়া হচ্ছে। চাপড়া ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় এই ছবি চোখে পড়ে। যা বিপদ নদী তীরবর্তী এলাকার গ্রামগুলির পক্ষে খুবই বিপজ্জনক। কারণ বর্ষার সময় জলঙ্গির জলস্তর বৃদ্ধি পায়। অববাহিকা চাওড়া হওয়ার ফলে স্রোত হারানো জলঙ্গি নদীর জলধারণ ক্ষমতা বেড়ে যায়। সেজন্য জলের চাপে নদীর বাঁধে ভাঙন দেখা যায়। পরিবেশবিদদের দাবি, এভাবে নদীর গতিপথ নিয়ে যদি লাগাতার কাটাছেঁড়া চলতে থাকে, তাহলে যে কোনও সময় বাঁধ ভেঙে জল গ্রামে ঢুকে পড়বে। নদীয়া জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক(ভূমি ও ভূমি সংস্কার) প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, অবৈধভাবে মাটি কাটা নিয়ে প্রশাসনের কড়া নজরদারি রয়েছে। কোনও এলাকা থেকে অভিযোগ এলেই আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিই। চাপড়ার বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। যদি এরকম হয়ে থাকে, কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরিবেশবিদ সুপ্রতিম কর্মকার বলেন, অববাহিকায় মাটি কাটার জন্য, নদী তার স্বাভাবিক গতিশীল ভারসাম্য হারায়। যার জন্য ভাঙন বাড়ে। চাপড়া ব্লকের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে জলঙ্গি নদী। বর্তমানে এই নদীতে স্রোত নেই। সারাবছর জল সেভাবে থাকে না বললেই চলে। আর এই জলঙ্গি নদীর তীরবর্তী এলাকাতেই তৈরি হয়েছে একাধিক ইঁটভাটা। জল না থাকার সুবাদে, বিভিন্ন সময় নদীর মাঝখান থেকেই মাটি কেটে তুলে জড়ো করা হয় ইটভাটাতে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রকাশ্যেই সেই মাটি কেটে নিচ্ছে মাফিয়ারা। যার ফলে নদী বক্ষে বিভিন্ন জায়গা গভীর হয়ে গিয়েছে। যা নদীর গতিপথে বাধার সৃষ্টি করে। সম্প্রতি নদীয়া জেলাজুড়েই লাগাতার বৃষ্টিপাতের ফলে ভাগীরথী নদীর জলস্তর অনেকটা বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তার প্রভাব পড়েছে জলঙ্গি নদীর উপর। সেই নদী এখন জল থইথই অবস্থা। চাপড়া ব্লকের বৃত্তিহুদা পঞ্চায়েতের তালুকহুদার কর্মকারপাড়া এলাকার নদী বাঁধের বেশ কিছু জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে।
এদিকে গ্রামবাসীরা জানায় , বাঁধের নীচের মাটি নদীর জলে ধুয়ে গিয়েছে। ফলে বাঁধের উপরের অংশের মাটি ধসে গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাতেই জলঙ্গি নদী বড় বাঁক নিয়েছে। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, বিগত কয়েক বছরে নদী বেশ কয়েক ফুট চওড়া হয়েছে। পুরোনো যে বাঁধ ছিল তার অস্তিত্ব নেই। বর্তমানে গ্রামের উঁচু রাস্তাই নদী পারের বাঁধে পরিণত হয়েছে। সেটাও জলঙ্গির জলস্তর বাড়ায় ভাঙতে বসেছে। বৃত্তিহুদা পঞ্চায়েত প্রধান রুপালি খাতুন বলেন, ওখানে বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছিল। ওই বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে।