প্রায় পনের বছর ধরে থমকে রয়েছে কাজ , জলঙ্গি নদীর উপর সেতু তৈরির দাবি পূরণ হয়নি আজও
বেস্ট কলকাতা নিউজ : নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষের সুবিধার জন্য বছর পনেরো আগে সংযোগকারী সেতু নির্মাণ শুরু হয়েও তা বন্ধ পড়ে রয়েছে। এই দুই জেলার ফাজিলনগর ও আমতলার মধ্যে জলঙ্গি নদীর উপর নির্মীয়মাণ সেই সেতু আজও অসম্পূর্ণ। দুই পাড়ের মানুষদের বর্ষাকালে নৌকা, বাকি সময়ে বাঁশের মাচা দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। স্থানীয়রা জানান, নদীয়ার করিমপুর ২ ব্লকের ফাজিলনগর ও মুর্শিদাবাদ জেলার আমতলার মধ্যে এই সেতু তৈরি শুরু হয়েছিল। তখন সকলের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছিল। কিন্তু নদীর মাঝে কয়েকটি পিলার তৈরির পরে আর কাজ এগোয়নি।

বাম আমলে সেতুটির শিলান্যাস হয়। সেতুটির জন্য সরকার ১২ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছিল। এলাকার মানুষের দাবি, নদীতে সেতু তৈরির জন্য সরকার ওই টাকা অনুমোদন করলেও দু’ পারের সংযোগকারী রাস্তা তৈরির টাকা অনুমোদন করা হয়নি। যে কারণে দুই পাড়ের জমি কেনায় সমস্যা হয়েছিল। রাজ্যে ক্ষমতা বদলের পরে ২০১৬ সালে তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক গৌরীশঙ্কর দত্তকে ফাজিলনগর গ্রামের বাসিন্দারা সেতুটি সম্পূর্ণ করার আবেদন জানান। সেইমতো তিনি প্রথমে সেতুর সংযোগকারী রাস্তার জন্য প্রয়োজনীয় জমির কথা জানান বাসিন্দাদের। প্রায় এক কোটি টাকা দামে ফাজিলনগর এলাকার কয়েকজন জমির মালিক সেই জমি সরকারকে বিক্রি করেন। এলাকার মানুষজনের সঙ্গে কথা বলে সেই সময়ে জমি অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু মুর্শিদাবাদ জেলার জমি অধিগ্রহণের কাজ আর হয়নি।
ফাজিলনগরের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক আব্দুর রউফ আনসারি জানান, প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষকে বাঁশের সাঁকো দিয়ে জলঙ্গি পারাপার করতে হয়। বর্ষাকালে নদীর জল বেড়ে গেলে নৌকো ভরসা। রাতবিরেতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে কাছের আমতলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে মারাত্মক সমস্যা হয়। কারণ, ফাজিলনগর থেকে করিমপুর হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ত্রিশ কিমি। অথচ নদী পেরিয়ে মুর্শিদাবাদের আমতলা হাসপাতাল মাত্র তিন কিমি। তাছাড়া আমতলায় স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য সব সুবিধা রয়েছে। প্রতিদিন এলাকার প্রায় দুশো ছাত্রছাত্রী আমতলায় স্কুল কলেজে যায়। পাশাপাশি বহু ব্যবসায়ী, দিনমজুর ও অন্য পেশার মানুষকে কষ্ট করে নদী পার হতে হয়। সেতু তৈরি হলে সকলেরই খুব সুবিধা হতো। মুর্শিদাবাদের সাংসদ আবু তাহের খান বলেন, সকলেই চান দ্রুত সেতুটি শেষ হোক। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জমি সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।

