কামাল মাত্র ২০ দিনেই! বাঙালি বিজ্ঞানী ‘পকেট ভেন্টিলেটর’ তৈরি করল করোনা রোগীদের জন্য
বেস্ট কলকাতা নিউজ : প্রয়োজন রয়েছে সব আবিষ্কারের মূলেই। ডা. রামেন্দ্রলাল মুখোপাধ্যায় এই প্রয়োজন খুব ভালভাবেই বুঝেছিলেন করোনা কালে। এমনকি কোভিড আক্রান্তও হয়েছিলেন তিনি। রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ নেমে গিয়েছিল ৮৮ শতাংশে। হাসপাতালে ভরতি হতে না হলেও সেদিন বুঝেছিলেন ভেন্টিলেটরের গুরুত্ব কতখানি কোভিডের ক্ষেত্রে। নেগেটিভ হওয়ার পর তাই আর বিলম্ব করেননি। কোভিড (COVID-19) রোগীদের জন্য বিশেষ ‘পকেট ভেন্টিলেটর’ বানিয়ে ফেলেছেন মাত্র ২০ দিনেই।
‘পকেট ভেন্টিলেটর’ই (Pocket Ventilator) বটে! ওজন মাত্র ২৫০ গ্রাম। ন্যূনতম ৮ ঘণ্টা চলে একবার ফুল চার্জ দিলে। অনায়াসে চার্জ দেওয়া যায় সাধারণ মোবাইল চার্জারে (অ্যান্ড্রয়েড টাইপ ২)। সুতরাং কোনও সমস্যা নেই যেখানে সেখানে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে। ডা. মুখোপাধ্যায়ের আরও বিশ্বাস, ছোট্ট এই ভেন্টিলেটর অত্যন্ত কাজে দেবে কোভিড ও মিউকরমাইকোসিস সামলাতে।
কীভাবে কাজ করবে এই ছোট্ট যন্ত্রটি?
দু’টো ভাগ রয়েছে ‘পকেট ভেন্টিলেটর’-এর। একটি পাওয়ার ইউনিট, অন্যটি মাউথ পিস যুক্ত ভেন্টিলেটর ইউনিট। সুইচ অন হলে বাইরের বাতাসকে যন্ত্রে মজুত আল্ট্রা ভায়োলেট চেম্বার (UV chamber) দিয়ে বিশুদ্ধ করিয়ে সজোরে ফুসফুসে পাঠায়। বাতাসে কোনও জীবাণু থাকলেও তা মরে যায় চেম্বারের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময়। রোগী যখন নিঃস্বাস ছাড়েন, তখনও এই যন্ত্র একই কায়দায় বাতাসকে আল্ট্রা ভায়োলেটে শুদ্ধ করে ছাড়ে। ফলে কোনও সমস্যা হবে না ডাক্তার বা নার্স বা রোগীর আশপাশের মানুষজনের। এই যন্ত্রটি হাসপাতালে ব্যবহৃত সিপ অ্যাপ (কন্টিনিউয়াস পজিটিভ এয়ারওয়ে প্রেশার) যন্ত্রের ভাল বিকল্প বলেই জানালেন ডা. মুখোপাধ্যায়।
দেশে ভেন্টিলেটরের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে ভয়াবহ কোভিড সামলাতে। কিন্তু তাও সংখ্যায় বেশ অপ্রতুল প্রয়োজনের তুলনায়। এই পরিস্থিতিতে বাড়িতে থাকা রোগীদের কাছে সঞ্জীবনী হয়ে উঠবে রামেন্দ্রবাবুর এই নতুন আবিষ্কার। হঠাত্ করে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে শুরু করলে এই যন্ত্রই ‘ক্রাইসিস’ সামলে দিতে পারবে দিন কয়েক। এমনই আশা ৩০টি আবিষ্কারে পেটেন্টের মালিক এই বাঙালি বিজ্ঞানীর।