এই শীতে দার্জিলিংই কি আপনার একমাত্র গন্তব্য? তাহলে আপনাকে টানবেই দেশের এই দুর্লভ আকর্ষণ
বেস্ট কলকাতা নিউজ : সাইবেরিয়ান টাইগারদের জন্য ভারতীয় চিড়িয়াখানার দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষ হল। শনিবার যখন সাইপ্রাস থেকে দুটি বড় বিড়াল (বাঘ) একটি বিনিময় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দার্জিলিঙের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্কে এসেছে। আধিকারিকরা জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যায় সাইপ্রাসের পাফোস চিড়িয়াখানা থেকে দুটি সাইবেরিয়ান টাইগার কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছয়। বিমানবন্দর থেকে, পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্কের একটি দল তাদের দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় নিয়ে যায়। রবিবার টাইগারগুলো পার্কে পৌঁছয়। বিনিময়ে জুওলজিক্যাল পার্ক দুটি রেড পান্ডাকে পাফোস চিড়িয়াখানায় পাঠিয়েছে।
পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্কের পরিচালক বাসভরাজ এস হোলিয়াচি ফোনে বলেছেন, ‘প্রস্তাবটি প্রায় দেড় বছর আগে পাস হয়েছিল। তাতেই আমরা সাইপ্রাস থেকে দুটি সাইবেরিয়ান টাইগার পেয়েছি। বিনিময় কর্মসূচিতে আমরাও একজোড়া লাল পান্ডা ওখানে পাঠিয়েছি।’ কর্তৃপক্ষের মতে, দেশের শেষ সাইবেরিয়ান বাঘ ‘কুনাল’ ২০১১ সালের নভেম্বরে নৈনিতাল চিড়িয়াখানায় মারা যায়। বয়সজনিত অসুস্থতার কারণে ১৮ বছর বয়সে মারা যায় বাঘটি। তিন বছর বয়সে তাকে ভারতে আনা হয়েছিল। জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার অফিসার ইনচার্জ (স্তন্যপায়ী) মুকেশ ঠাকুর বলেছেন, ‘আমার মতে, দেশে কোনও সাইবেরিয়ান টাইগার নেই।’
পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্কের শেষ সাইবেরিয়ান বাঘটি ২০০৭ সালে মারা গিয়েছিল। হলিয়াচি বলেছেন, ‘এই চিড়িয়াখানার শেষ সাইবেরিয়ান বাঘটি ২০০৭ সালে মারা যায়। আমরা ওই খাঁচাটি পরিবর্তন করেছি। সেখানে আমরা এই দুটি সাইবেরিয়ান টাইগারকে দর্শকদের দেখার জন্য রাখব। যাইহোক, আপাতত একমাসের জন্য, এই বাঘ দুটোকে একটি বিশেষ খাঁচায় কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। দর্শকরা একমাস পরে বাঘ দুটোকে দেখতে পাবে। আমি যতদূর জানি, এই মুহূর্তে কোনও ভারতীয় চিড়িয়াখানায় সাইবেরিয়ান টাইগার নেই।’ এবার যে টাইগারগুলো এসেছে, সেই সাইবেরিয়ান টাইগারগুলোর একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী। বয়স দেড় বছর। আর, পাফোস চিড়িয়াখানায় পাঠানো রেড পান্ডাদের মধ্যে পুরুষ পান্ডাটির বয়স ছয় বছর। আর, স্ত্রী পান্ডাটির বয়স দুই বছর। পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্কে ওই পান্ডাদের প্রজনন করা হয়েছিল। বর্তমানে, চিড়িয়াখানায় নয়টি পুরুষ এবং ১৫টি স্ত্রী রেড পান্ডা আছে।
১৯৫৮ সালের আগস্টে স্থাপিত পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্কটি দেশের সবচেয়ে উঁচু অঞ্চলে তৈরি হওয়া চিড়িয়াখানা। এই চিড়িয়াখানা রেড পান্ডা, স্নো লেপার্ড এবং ব্লু শিপ-সহ ১০টি প্রাণীর সংরক্ষণ এবং প্রজননে সফল হয়েছে। এই ব্যাপারে হোলেয়াচি বলেন, ‘যেহেতু আমাদের কাছে এখন একটি পুরুষ এবং একটি মহিলা সাইবেরিয়ান বাঘ আছে, আমরা চিড়িয়াখানায় তাদের প্রজননের চেষ্টা করব। আমরা বর্তমানে রেড পান্ডা এবং স্নো লেপার্ড-সহ বেশ কয়েকটি প্রাণীর প্রজনন কর্মসূচি চালাচ্ছি।’
সাইবেরিয়ান বাঘ প্রধানত রাশিয়া এবং চিনের কিছু অংশে পাওয়া যায়। এগুলো কালো ডোরা এবং ঘন পশমযুক্ত কমলা রঙের হয়। যে কারণে অন্যান্য বাঘের থেকে এদের আলাদা করা যায়। বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা বাঘ হিসেবে সাইবেরিয়ান টাইগাররা পরিচিত। পুরুষ সাইবেরিয়ান বাঘের দৈর্ঘ্য হয় ১২ ফুটেরও বেশি। লেজের দৈর্ঘ্য হয় তিন ফুটেরও বেশি। ওজন হয় ৪০০ কেজিরও বেশি। মহিলা টাইগাররা সেই তুলনায় ছোট হয়।