কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুঁড়ে গেলেন নরেন্দ্র মোদি, পাল্টা আক্রমণ করলেন রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কলকাতা সফর ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র তরজা শুরু হয়েছে । মোদি দাবি করেছেন, “বাংলার জন্য যে টাকা আমরা সরাসরি রাজ্য সরকারকে পাঠাই, তার অধিকাংশই লুঠ হয়ে যায় ।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেছেন যে, বিজেপি সরকার বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতিকে শক্তিশালী করতে কাজ করছে । এই মন্তব্যের পরই পাল্টা ক্ষোভ উগরে দিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস । তাদের বক্তব্য, রাজ্যের দিকে আঙুল তোলার আগে কেন্দ্রের উচিত শ্বেতপত্র প্রকাশ করা । স্পষ্টভাবে দেখানো হোক, ২০২১ সালে বাংলায় বিজেপির লজ্জাজনক পরাজয়ের পর থেকে কেন্দ্র কত টাকা দিয়েছে । তৃণমূলের প্রশ্ন, বাংলাকে ছোট করার অভিযোগ তুলেই বিজেপি বারবার রাজনীতির নাটক সাজায় ।

তৃণমূলের সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে বলা হয়েছে, বিজেপির দাবি নিছক ভণ্ডামি । কারণ —

১. বিজেপি-শাসিত রাজ্যে বাংলাভাষীরা মাতৃভাষায় কথা বললেই হেনস্থা, অপমান ও শাস্তির মুখে পড়ছেন ।
২. দিল্লি পুলিশ বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে অপমান করেছে, যা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অধীনেই ঘটে ।
৩. বিজেপির প্রচারক অমিত মালব্য পর্যন্ত বলেছেন—’বাংলা বলে কোনও ভাষাই নেই ।’

প্রধানমন্ত্রী মোদি এদিন অনুপ্রবেশের প্রসঙ্গ টেনে দাবি করেছেন, “এই দেশ অনুপ্রবেশকারীদের সহ্য করবে না ।” তৃণমূলের পাল্টা বক্তব্য — সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব তো কেন্দ্রীয় বাহিনী বিএসএফ-এর হাতে, যা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অধীন । তাহলে সীমান্তে ফাঁকফোকর দিয়ে অনুপ্রবেশের দায় নেবে কে ? নিরীহ নাগরিকদের উপর হামলা হলে তার ব্যর্থতার দায় কার ?

এই প্রসঙ্গে পাল্টা জবাব দিতে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা এবং দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ । বৈঠকে তাঁরা নারদ কাণ্ডের ফুটেজ তুলে ধরেন । যেখানে শুভেন্দু অধিকারীকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে । কটাক্ষ করে তৃণমূল নেতাদের দাবি— বিজেপি যাদের বিরুদ্ধে একসময় দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল, তারাই এখন মোদির পাশের আসনে বসে থাকেন ।

কুণাল ঘোষএদিন এও মন্তব্য করেন , “কাচের ঘরে বসে আজ ঢিল ছুঁড়লেন নরেন্দ্র মোদি । বাংলায় এসে শুধু নাটক করে গেলেন। পরিযায়ী পাখির মতো আসা-যাওয়া করে বিজেপি বাংলায় কোনও লাভ করতে পারেনি— ২০১৬ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সেটাই প্রমাণিত ।” তৃণমূল আরও অভিযোগ করে, বিজেপি শাসিত সমস্ত রাজ্যেই দুর্নীতি, অপশাসন ও নারী নির্যাতন নিত্যদিনের ঘটনা । ফলে বাংলার বিরুদ্ধে আঙুল তোলার আগে কেন্দ্রেরই জবাবদিহি করা উচিত । কুণাল ঘোষ কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, “বাংলায় মোদি যতবার আসবেন, তৃণমূলের আসন সেই অনুপাতে বাড়বে ।”এদিকে তৃণমূলের দাবি, আগামী ২০২৬ সালের নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে চতুর্থবার ক্ষমতায় ফিরবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং এবার আরও রেকর্ড ভোটে জিতবে তৃণমূল কংগ্রেস ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *