চরম নাভিশ্বাস নতুন ফ্ল্যাট কিনতে গিয়ে , বাজেট ছাড়িয়ে যাচ্ছে ছাড় দিলেও!
বেস্ট কলকাতা নিউজ : আপনি কি নতুন ফ্ল্যাট কেনার কথা ভাবছেন? বাজেটের পর বা পুজোর পর? আসন্ন ইউনিয়ন বাজেটে নতুন ফ্ল্যাট কেনার উপর বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা বা ছাড় দেওয়া হতে পারে। আর পুজোর সময় নতুন ফ্ল্যাট বুকিংয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন রকম অফার বা ছাড়ও দেয়। তবে, এত ছাড়ের পরও নতুন ফ্ল্যাট কিনতে গেলে বাজেট ছাড়য়ে যেতে পারে মধ্যবিত্তর। কারণ, জানুয়ারি থেকে জুন এই ৬ মাসেই শহর কলকাতায় ফ্ল্যাটের দাম বেড়েছে গড়ে ৬ শতাংশ। অর্থাত্ গত বছর ডিসেম্বরে যে ফ্ল্যাটের দাম ছিল ৫০ লক্ষ টাকা। এখন সেই ফ্ল্যাটের দাম ৫৩ থেকে ৫৪ লক্ষ টাকা। রাস্তায় যাতায়াতের পথে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন খুঁটিয়ে দেখলেই বোঝা যায় মাত্র কয়েকমাসেই ফ্ল্যাটের দাম কীভাবে ও কতটা বেড়ে গিয়েছে।
শুধু কলকাতা ও শহরতলির নয়, টিয়ার ২ ও টিয়ার ৩ শহরেও ফ্ল্যাটের দাম গত ৬ মাসে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে, জানা গিয়েছে এক আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা সংস্থার সমীক্ষায়। এই সব এলাকায় নতুন ফ্ল্যাট কিনতে বাড়তি ৪ থেকে ৮ লক্ষ টাকা খরচ করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। ২০২৩-এর শেষে কলকাতায় নতুন ফ্ল্যাটের গড় দাম ছিল বর্গফুট পিছু ৩ হাজার ৬৪৮ টাকা। এখন সেটাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৩০০ টাকার আশেপাশে। বাজার অর্থনীতি অনুযায়ী কোনও জিনিসের চাহিদা বাড়লে, তার জোগান কমে গেলে সেই জিনিসের দাম বাড়তে থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে সমীক্ষা বলছে, দাম বাড়লেও ফ্ল্যাটের চাহিদা মোটেও বাড়েনি, বরং কমেছে। অর্থাৎ, একদিকে ফ্ল্যাটের বিক্রি কমছে, অন্যদিকে দামও বেড়ে চলেছে। অদ্ভুত বিষয় সন্দেহ নেই, কিন্তু এমনই হচ্ছে।
যদিও কাঁচামালের দাম ও বাড়ি তৈরির খরচের জন্য ফ্ল্যাটের দাম বাড়েনি। এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও কারণ। সমীক্ষায় এই ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। কিন্তু কারণটা কি খুব অস্পষ্ট? তোলাবাজি, ভোটের সময় চাঁদা দেওয়ার চাপ, নাকি স্থানীয় নেতাদের পকেট ভরাতে গিয়ে ফ্ল্যাটের দাম বাড়াতে হচ্ছে? কোনটা ঠিক? যদিও এগুলো কোনও প্রামোটার বা বিল্ডার প্রকাশ্যে স্বীকার করবেন না। কিন্তু আড়ালে-আবডালে তাঁরা মেনে নিচ্ছেন যে এই কারণগুলো একেবারেই উড়িয়ে দেওয়ার মতো নয়।
এমন ভাবে ফ্ল্যাটের দাম বেড়ে চলায় ইচ্ছে থাকলেও অনেকে মানুষই ফ্ল্যাট বুকিং করছেন না। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফ্ল্যাটের দাম বাজেটের বাইরে চলে গিয়েছে। রিপোর্ট বলছে গত ৬ মাসে কলকাতায় ১০ হাজার ৮৬৭টি নতুন ফ্ল্যাট তৈরি হয়েছে। ২০২৩ সালের প্রথম ছয় মাসের নিরিখে সংখ্যাটা বেশি। কিন্তু বিক্রির নিরিখে? ২০২৩ সালে প্রথম ৬ মাসের তুলনায় চেয়ে ২০২৪ সালের প্রথম ৬ মাস এখনও পিছিয়ে। গত জুন মাস পর্যন্ত এই রাজ্যে স্ট্যাম্প ডিউটি ও সার্কেল রেটেও ছাড় চালু ছিল। ১ জুলাই থেকে সেটা প্রত্যাহার করেছে রাজ্য সরকার। ফলে ফ্ল্যাট কেনার খরচ আরও বেড়ে গেছে। আর তাতে চাহিদা আরও কমার আশঙ্কা।