চিদাম্বরম-পত্নী ১.৫ কোটি টাকা নিয়েছিলেন সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে ? অবশেষে ইডির চার্জশিট পেশ আদালতে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : সারদা মামলায় এবার নলিনী চিদম্বরমের বিরুদ্ধে চার্জশিট ইডি-র। এ দিন পি চিদাম্বরমের স্ত্রীর নামে ইডি ১১০০ পাতার নথি জমা দেয় ইডির বিশেষ আদালতে। এর মধ্যে মূল চার্জশিট ৬৫ পাতার। অভিযোগ, সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে ১.৫ কোটি টাকা নিয়েছিলেন নলিনী চিদাম্বরম। সমস্ত টাকাই অ্যাটার্চ হয়েছে বলেই ইডি দাবি।
ইডির দাবি, সারদা মামলায় তিন বার তলব করা হলেও একবারও হাজিরা দেননি নলিনী। তাঁকে যে নোটিস পাঠানো হয়েছিল, সেই নোটিসের উপর হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দেয়। পরে কলকাতা হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ তুলে নিলে, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন নলিনী। সুপ্রিম কোর্ট সেই সময় জানিয়েছিল, নলিনী চিদাম্বরমকে তলব করা যাবে না। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞেসাবাদ করা যাবে। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে ইডি মেইল করলেও, তার উত্তর দেননি নলিনী। সম্প্রতি ফের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে ইডির তরফে ইমেল করা হয় চিদাম্বরম।
আজ তৃতীয় সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসাবেই দেখানো হয়েছে নলিনী চিদম্বরমকে। আর্থিক তছরুপের অংশ ছিল ওই দেড় কোটি টাকা, চার্জশিটে এমনটাই দাবি ইডির। সম্পত্তি অ্যাটাচমেন্ট ও অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের নাম দেওয়া আছে। উনি কনসালটেন্সি বাবদ টাকা নেওয়ার কথা দাবি করলেও প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে পারেননি।
প্রসঙ্গত, সারদা মামলায় নাম জড়ানোর পরই নলিনী চিদাম্বরম দাবি করেছিলেন, ওই টাকা তিনি ট্যাক্স কনসালটেন্ট হিসাবে কনসালটেন্সি ফি বাবদ নিয়েছিলেন। যদিও ইডির দাবি, এর সপক্ষে কোনও নথি দেখাতে পারেননি নলিনী। এ দিন আদালতে ইডি চার্জশিট পেশ করলে, আদালতের তরফে প্রশ্ন করা হয়, “এত দিন পরে কেন চার্জশিট দেওয়া হল?”। ইডি জবাবে বলে “তদন্ত চলছে। এটা সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট”। বিচারক বলেন, “ধরে নিন একজন ক্রিমিনাল লইয়ার, তার কাছে অপরাধীরা যান আইনের সাহায্যের জন্য। তাহলে কি উনি মানি লন্ডারিংয়ের পার্ট হয়ে গেলেন!”
আদালতের তরফে আরও প্রশ্ন করা হয়, “উনি যদি কনসালটেন্সি নিয়ে থাকেন সেটা তো আয়কর দফতর দেখবে।” বিচারক প্রশ্ন করেন, “দশ বছর পর চার্জশিট কেন? আপনারা জমা দিলেন, আমি দেখব। কগনিজেন্স নেওয়া যাবে কি যাবে না, দেখা হবে। একজন ক্রিমিনাল টাকা লুঠ করল। তা থেকে ফি দিলেন, তাহলে কি আইনজীবী অভিযুক্ত হয়ে যাবে!”ইডি আদালতে আজ চার্জশিট জমা দিলেও, আদালত তা গ্রহণ করেনি। নলিনী চিদাম্বরম কীভাবে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, সেই তথ্য বোঝাতে বলা হয়েছে। এরপর ইডি সময় চায়। ১৮ জুলাই এই চার্জশিটের পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৯ সালে সিবিআই-ও নলিনী চিদাম্বরমের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল। বারাসত কোর্টে এই চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছিল। সেই চার্জশিটে বলা হয়েছিল, নলিনী চিদাম্বরম সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে চক্রান্ত করেছিল।