মালদায় বিবস্ত্র করে মারধর চোর সন্দেহে,দুই মহিলার জামিন মঞ্জুর করল আদালত
বেস্ট কলকাতা নিউজ :মালদা-কাণ্ডে অবশেষে নির্যাতিতা দুই মহিলার জামিন মঞ্জুর করল আদালত। সোমবার মালদা আদালতে স্থানীয় থানার পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন নির্যাতিতা দুই মহিলার আইনজীবী অমিতাভ মৈত্র। তিনি বলেন, ‘দুই মহিলাকে চুরির অভিযোগে বিবস্ত্র করে মারধর করা হয়েছিল। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু পুলিশ সেই দুই নির্যাতিতা মহিলাকেই চুরির অভিযোগ গ্রেফতার করেছে। পরবর্তীতে তাঁদের জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যাঁদেরকে মারধর করা হল, তাঁরা কোনওভাবে চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল না? তা এখনও প্রমাণ হয়নি। এমনকী, অভিযোগপত্রে পুলিশের খাতায় ওই দুই মহিলার নামও ছিল না। অথচ তাঁদেরকে অন্যায় ভাবে জেল খাটতে হল। এর খেসারত কে দেবে?’ এই প্রশ্ন তুলে বিচারকের সামনে স্থানীয় থানার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সোচ্চার হন আইনজীবী অমিতাভ মৈত্র।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহের মঙ্গলবার মালদায় টাকা চুরির সন্দেহে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র অবস্থায় মারধর করা হয়। এরপর গত শুক্রবার বিজেপির পক্ষ থেকে ওই দুই মহিলার প্রতি নির্যাতনের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করা হয়। আর তারপর থেকে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে যায়। প্রাথমিক ভাবে তদন্ত শুরু করে ঘটনার পাঁচ দিন পর প্রবল চাপের মুখে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ তিন মহিলা-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে।
গত ১৭ জুলাই মালদায় একটি ফাঁড়ি ভাঙচুর করা হয়েছিল। পরের দিন বিবস্ত্র অবস্থায় মারধরের পর এই দু’জনকে নিয়ে এসে গ্রেফতারের পর পুলিশ ফাঁড়ি ভাঙচুরের অভিযোগও এঁদের ওপর চাপিয়ে দেয়। আদালতে পুলিশের সেই অভিযোগও টেকেনি। দেখা গিয়েছে, যেখানে ফাঁড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছিল, সেখান থেকে নির্যাতিতা দুই জায়ের বাড়ি অন্তত ৯০ কিলোমিটার দূরে। যার ভিত্তিতে নির্যাতিতা দুই মহিলার আইনজীবী অভিযোগ করেন, পুলিশ আদালতকে মিথ্যে কথা বলছে। আদালতকে বিভ্রান্ত করছে।
পরে সাংবাদিকদের আইনজীবী মৈত্র বলেন, ‘ওই দুই মহিলা যাঁদেরকে মারধর করা হয়েছিল, তাঁদের বিরুদ্ধে চুরি-সহ সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার কোনও প্রমাণই দিতে পারেনি পুলিশ। ফলে, মহামান্য আদালত এই বিষয়টি বিবেচনা করেই ওই দুই মহিলার জামিন মঞ্জুর করেছে।’ ইতিমধ্যে, এই ঘটনায় আইসি জয়দেব চক্রবর্তী-সহ বেশ কয়েকজন পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে মালদা আদালতে মামলা রুজু হয়েছে। পাশাপাশি মানবাধিকার কমিশনেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।