রামপুরহাটে খুন হওয়া ছাত্রীর বাড়িতে এলেন শতাব্দী রায় , প্রকাশ্যে ফাঁসিও চাইলেন অভিযুক্তের
বেস্ট কলকাতা নিউজ : শতাব্দী রায়কে দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারলেন না রামপুরহাটের নিহত ছাত্রীর মা। কেঁদে ফেললেন হাউহাউ করে। তা দেখে সাংসদের চোখেও জল। তিনি পরিবারটির পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন। এমনকী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সহমত হয়ে অভিযুক্তের ফাঁসিও চাইলেন। শতাব্দী বলেন, এই সমাজে বেঁচে থাকার অধিকার হারিয়েছে অভিযুক্ত।

সোমবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন শতাব্দী রায়। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী ও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সাংসদকে দেখে বাড়ির ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত ছাত্রীর মা। ততক্ষণে প্রতিবেশী মহিলারাও সেই বাড়িতে ভিড় জমিয়েছেন। ছাত্রীর মা বলেন, কী এমন দোষ করেছিল মেয়ে, যে নির্যাতন চালিয়ে এভাবে টুকরো টুকরো করে মেরে ফেলবে। এখনও মেয়ের দুই হাতও পাওয়া যায়নি। খুনের বর্ণনা শুনে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি সাংসদ। মৃতার ঠাকুরমা সাংসদকে বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষককে ফাঁসি দিতে না পারলে আমাদের হাতে ছেড়ে দিন। নতুবা কোনওদিন আমাদের ঘরে পা দেবেন না। ১৫ দিন দেখব, তারপর তিরধনুক নিয়ে রাস্তায় নামব। সাংসদ তাঁদের আশ্বস্ত করতে বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে অভিযুক্ত ফাঁসি হবে এমনটা ভাববেন না। আইনের অনেক প্রক্রিয়া আছে। তবে যত তাড়াতাড়ি হয় সেটা দেখা যাবে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। আপনাদের লড়াইয়ে পাশে থাকব। এতবড় অন্যায়কে কোনওদিনই সমর্থন করব না।
এদিকে মৃতার জামাইবাবু বলেন, অভিযুক্তকে থানায় ধরে নিয়ে গিয়ে পাঁচদিন আটকে রেখে কেন ছেড়ে দেওয়া হল? কারা সই করে তাকে ছাড়িয়েছিল? ওদেরও যাবজ্জীবন সাজা চাই। শতাব্দী বলেন, তোমরা কি জান কারা ছাড়িয়েছিল? উত্তরে জামাইবাবু বলেন, স্কুলের এক সহকারী শিক্ষক সহ কয়েকজন ছিল। ২৮ আগস্ট অভিযোগ করেছি, তখন যদি পুলিশ তৎপর হতো তাহলে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হতো মেয়েটি। পুলিশ টাকা খেয়ে চুপ করে বসে থেকেছে। ১৫ দিনের মধ্যে শিক্ষককে ছেড়ে দেওয়ার কাগজপত্র ও সেই মুহূর্তের ভিডিও প্রকাশ করা না হলে আন্দোলনে নামব। তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক তৃণমূল নেতার কাছ থেকে বিষয়টি জানতে চান সাংসদ। সেই নেতা জানান, আদিবাসীদের পাঁচ সদস্যর টিম এই বিষয়টি জানতে থানায় গিয়েছিলেন। পুলিশ ৫ অক্টোবরের মধ্যে সেই কাগজ ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেবে বলেছে। শতাব্দী বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে এসপির সঙ্গেও কথা বলব। এদিন পরিবারের সদস্যরা সাংসদের কাছে আরও দাবি করেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে প্রকাশ্যে ফাঁসি দিতে হবে। যেমন মেয়েকে সে কষ্ট দিয়ে মেরেছে। তেমনি তার কষ্টও দেখতে চাই আমরা। এদিন সংবাদ মাধ্যমে শতাব্দী রায় এও বলেন, অত্যন্ত দুঃখের ঘটনা। এত নৃশংস ভাবে খুন। এতো সাইকোপ্যাথিক ক্রিমিন্যাল। সমাজে এদের বাঁচার কোনও অধিকার নেই। অভিযুক্তর সত্যিই ফাঁসি হওয়া উচিত। প্রকাশ্যে পাবলিকের সামনে এই ফাঁসি হওয়া উচিত। পরিবার অত্যন্ত দুঃখের মধ্যে আছে, তাই এখুনি ফাঁসি চাইছে।