একাধিকবার অনুব্রতর নগদ লেনদেন প্যান কার্ড ছাড়াই, বাস্তবে কতটা সম্ভব, কী বলছেন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ
বেস্ট কলকাতা নিউজ : গরু পাচার মামলায় ইডি অনুব্রত মণ্ডলের নামে যে চার্জশিট দাখিল করেছে, সেখানে উল্লেখ রয়েছে মারাত্মক এক কৌশলের । চার্জশিটে বলা হয়েছে, আয়কর ফাঁকি দিতে অনুব্রত মোট টাকার অঙ্ক থেকে ১ টাকা করে কম অ্যাকাউন্টে জমা দিতেন । এই কায়দায় তিনি একাধিক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিতেন। ইডির আরো দাবি, একই দিনে অনুব্রতর একাধিক অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছিল ৪৯ হাজার ৯৯৯ টাকা করে। কিন্তু তাতে কি সুবিধা?
অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তের কথায়, “ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার এখন যা সিস্টেম, তাতে অ্যাকাউন্টে ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি যদি জমা দেন তাহলে কোন অ্যাকাউন্ট থেকে সেই টাকা যাচ্ছে, যিনি ডিপোজিট করছেন, তার একটা ডিটেল দরকার হয়। তার জন্য প্যান নম্বরের দরকার হয়। এটা সাধারণ নিয়ম। কিন্তু প্যান ডিটেল লুকিয়ে টাকা জমা দিতে চাইলে ৫০ হাজারের কম টাকা জমা দেওয়া যায়। ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি জমা দিতে গেলে লাগবে আপনার প্যান নম্বরটাও । জানতে চাওয়া হবে কে টাকা জমা দিলেন।”
তবে অনির্বাণবাবু মতে, এটা বারবার সম্ভব নয়। কারণ, একাধিকবার এমনটা হলে ব্যাঙ্কের নজরে তা পড়বে। ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বা ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের নজরে বিষয়টি পড়তে বাধ্য। আর তেমনটা হওয়া মানে এমন গ্রাহককে ডেকে ম্যানেজারের বিষয়টি জানতে চাওয়ারও এক্তিয়ার রয়েছে ।অনির্বাণ দত্তের কথায়, “সেই অ্যাকাউন্টের উপর কড়া নজরদারি দরকার ছিল। অ্যাকাউন্ট যার নামে, তাকে ডেকে প্রকৃত তথ্য জানার অধিকারও আছে ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের ।” অর্থাৎ অত্যন্ত পরিকল্পনা করেই এই লেনদেন যে হয়েছিল একপ্রকার তা স্পষ্ট। আর বারবার যেহেতু একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়, তাই প্রয়োজন একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেরও।
এদিকে ইডি জানিয়েছে সেই লেনদেন হয়েছে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেই । তদন্তে অনুব্রতর ঘনিষ্ঠবৃত্তে যাঁরা থাকতেন, বাড়ির সদস্য থেকে পরিচিত, পরিচারকের আত্মীয় সকলের নামেই একাধিক অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে বলেই সূত্রের খবর। কালো টাকা সাদা করার খেলায় উঠে আসছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নেওয়ার তত্ত্বও ।