ক্রমশ ভেঙে পড়েছে বসতভিটে, হৃদরোগ বৃদ্ধার প্রাণ কেড়ে নিল বৌবাজারে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : এক দিকে যখন বৌবাজারে একের পরে এক বাড়ি ভেঙে পড়ার বিপর্যয় চলছে ঠিক তখনই বৌবাজার-কাণ্ডে সামনে এল আরও এক খারাপ খবর । আচমকাই হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন বৌবাজারের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হওয়া এক অশীতিপর বৃদ্ধা। সব মিলিয়ে, এবার ক্ষোভের আঁচ বাড়ছে সমগ্র বৌবাজার এলাকা জুড়ে। এত দিন তাঁরা মেনে নিয়েছেন সব রকম অসুবিধা, কিন্তু এবার বাড়ি-ঘরের একটা নিশ্চয়তা না পেলেই নয় , এমনই দাবি উঠেছে এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ ভিটে ছাড়া বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে।
সমস্যার সূত্রপাত হয় ১০ দিনেরও বেশি আগে থেকে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গের জন্য বৌবাজার এলাকার মাটির নীচে টানেল বোরিং মেশিনের কাজ চলছিল। সেই কাজ চলার সময়েই আচমকা একটি বাড়ি ভেঙে পড়ে বৌবাজারেের দুর্গা পিথুরি লেনে । আতঙ্ক তৈরি হয় এলাকার মানুষের মধ্যে। সৌভাগ্যক্রমে, সে দিন কেউ হতাহত হননি। কিন্তু বড় বিপদের আশঙ্কা পরিষ্কার হয় তদন্ত শুরু হতেই।ইঞ্জিনিয়াররা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মাটির তলায় প্রচুর জল রয়েছে ওই এলাকায়। সুড়ঙ্গ কাটতেই জল জমে মাটি আলগা হয়ে যাচ্ছে আর তার জেরে ভেঙে পড়েছে এলাকার একের পর এক বাড়ি। বিপদের মুখে পড়েছে এলাকার অধিকাংশ বাড়িই। তৎপরতার সাথে বউবাজারের একাধিক বাড়ি খালি করে দেয় পুলিশ। কয়েক ঘণ্টার নোটিসে ঘর ছাড়া হয় প্রায় ৫০ টি পরিবার । রাতারাতি হোটেলে গিয়েও ওঠেন ৪০০-৫০০ মানুষ।তাঁদেরই মধ্যেই ছিলেন ৮০ বছরের বৃদ্ধা অঞ্জলি মল্লিক।বাড়ি ছাড়ার পরেই ভেঙে পড়ে তাঁদের বাড়িটিও।
অঞ্জলিদেবী ছিলেন বৌবাজারের স্যাকরা পাড়া এলাকার বাসিন্দা । মধ্য কলকাতার খোলামেলা বাড়িতে থাকাই ছিল তার আজীবন এর অভ্যাস।কিন্তু বাড়িটি ভেঙে পড়ার পরে অন্যদের মতো চাঁদনি চকের একটি হোটেলে গিয়েও উঠতে হয় তাঁকে।খুব স্বাভাবিক কারণেই হোটেলের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না তিনি। অসুবিধা হচ্ছিল ঘুমেরও, চরম অসুবিধা হচ্ছিল খাওয়ারও। দুশ্চিন্তা তো আছেই।এই ভাবে এত দিন থাকার পরে আচমকাই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন মঙ্গলবার রাতে। তীব্র ব্যথা অনুভূত হয় বুকে । সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয় । কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসকেরা সাফ জানিয়ে দেন, হাসপাতালে আনার আগে, হোটেলেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।