শীর্ষে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ-যোগীরাজ্য, দেশে এক লক্ষ স্কুলে নিযুক্ত মাত্র একজন করে শিক্ষক, সামনে এলো এক চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষাখাতে ব্যয় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বলেছিলেন, জীবনের সবথেকে বড় বিনিয়োগ হল শিক্ষা! সেই কারণে জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করছে তাঁর সরকার। এমনকি শিক্ষকদের ‘হোমওয়ার্ক’ও দিয়েছেন ‘পড়ুয়াদের মধ্যে স্বদেশি সামগ্রীর প্রচার করুন!’ কিন্তু তাঁর আমলেই দিন দিন চরম বেহাল হচ্ছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা।

মোদি সরকারের আমলে গত ১০ বছরে দেশে সরকারি স্কুলের সংখ্যা কমেছে ৮ শতাংশ। বন্ধ হয়ে গিয়েছে প্রায় ৯০ হাজার স্কুল। সম্প্রতি প্রকাশিত কেন্দ্রীয় সরকারি রিপোর্টে সামনে এসেছে আরও করুণ চিত্র—দেশে বর্তমানে মাত্র একজন শিক্ষকের উপর নির্ভর করে চলছে লক্ষাধিক স্কুল। সঠিক সংখ্যাটা ১ লক্ষ ৪ হাজার ১২৫। আর সেই সমস্ত স্কুলগুলিতে পড়াশুনো করছে ৩৩ লক্ষ ৭৬ হাজার ৭৬৯ জন ছাত্রছাত্রী। অর্থাৎ, গড়ে ৩৪ জন ছাত্রের জন্য মাত্র একজন শিক্ষক ! তাৎপর্যপূর্ণভাবে এহেন সিঙ্গল টিচার স্কুলের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে দু’টি ডাবল ইঞ্জিন রাজ্যই, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশ।

দেশের শিক্ষার অধিকার আইনে (২০০৯) বলা হয়েছে, শিক্ষক ও পড়ুয়ার অনুপাত প্রাথমিক স্তরে (প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি) হওয়া উচিত ১:৩০ ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরে (ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি) ১:৩৫। অর্থাৎ, প্রথমটিতে ৩০ ও দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ৩৫ জন পড়ুয়া পিছু এক জন করে শিক্ষক বা শিক্ষিকা থাকা প্রয়োজন। কিন্তু, শিক্ষামন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের সেই রিপোর্ট বলছে, সেই মানদণ্ডের ধারেকাছেও নেই দেশের বর্তমান স্কুলশিক্ষা ব্যবস্থা। সবচেয়ে বেশি সিঙ্গল টিচার স্কুল রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশে (১২ হাজার ৯১২)। তারপরই রয়েছে যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশ (৯ হাজার ৫০৮)।

প্রথম রাজ্যটি এনডিএ শাসিত। মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর সমর্থনের উপর কার্যত নির্ভর করেই কেন্দ্রে চলছে তৃতীয় মোদি সরকার। আর দ্বিতীয়টি তো খোদ বিজেপির ‘মডেল স্টেট’। এমন স্কুলগুলিতে পড়ুয়া ভর্তির নিরিখে শীর্ষে বিরাজ করছে যোগীরাজ্য। মন্ত্রকের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সিঙ্গল টিচার স্কুলে পাঠরত মোট ৩৩ লক্ষ পড়ুয়ার মধ্যে ৬ লক্ষেরও বেশি পড়ুয়া রয়েছে শুধু উত্তরপ্রদেশে। আরও জানা গেছে এমন স্কুলের সংখ্যায় তৃতীয় থেকে পঞ্চম স্থানে রয়েছে ঝাড়খণ্ড (৯ হাজার ১৭২), মহারাষ্ট্র (৮ হাজার ১৫২) ও কর্ণাটক (৭ হাজার ৩৪৯)। তালিকায় রয়েছে বাংলাও (৬ হাজার ৪৮২)। দিল্লির জায়গা অবশ্য একদম নীচের দিকে। সেখানে এই ধরনের স্কুলের সংখ্যা মাত্র ৯। তবে এখানেই শেষ নয়, গত ১০ বছরে দেশে সরকারি স্কুলের সংখ্যা ১১ লক্ষ ০৭ হাজার ১০১ থেকে কমে হয়েছে ১০ লক্ষ ১৭ হাজার ৬৬০।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *