৯০ বছর ধরে কোন রহস্যে মজে বাঙালি? জেনে নিন বোরোলিন-এর নানা অজানা ইতিহাস
বেস্ট কলকাতা নিউজ : কয়েক যুগ ধরে আজও দেশের বেশিরভাগ মানুষ ব্যবহার করে আসছে সুগন্ধযুক্ত অ্যান্টি সেপটিক ক্রিম বোরোলিন। বাজারে হাজারো ক্রিম এলেও বোরোলিন কিন্তু আজও নিজের স্বতন্ত্র পরিচয় ধরে রেখেছে সবুজ নলের ক্রিমে। বোরোলিন নিজেদের ৯১ বছরের এই যাত্রায় একই অনুভূতি, একই সুরক্ষা দিয়ে আসছে তাঁর গ্রাহকদেরকেও। বাড়িতে আজও যতই অন্য ক্রিম থাকুক না কেন, লোকে কিন্তু বোরোলিনকে নিজেদের বাড়িতে রাখেই রাখে। আসুন এবার আমরা খুঁজে দেখি বোরোলিনের নানা অজানা ইতিহাস।
১৯২৯ সালে পথচলা শুরু করে বোরোলিন : এটা এমন এক সময়কার কথা যখন ভারতে পাওয়া যেত আমদানি করা এবং ব্যয়বহুল ক্রিম। সেসব জিনিস কেবল ব্যবহার করতে পারত ধনী এবং বড় লোকেরাই।সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে ছিল এই সমস্ত জিনিস। এমন এক পরিস্থিতিতে ১৯২৯ সালে ভারতীয় ব্র্যান্ডে অ্যান্টিসেপ্টিক ক্রিম তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কলকাতার গৌরমোহন দত্ত। দত্ত ভেবেছিলেন, এমন একটি অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম দেশে থাকা উচিত যা সহজেই পৌঁছতে পারে প্রতিটি ভারতীয়ের কাছে।
বোরোলিনের লোগো’র গল্প: যদি আপনি গ্রিন টিউব বোরোলিন কিনে থাকেন তবে আপনি অবশ্যই লক্ষ্য করে থাকবেন যে হাতির একটি লোগো ছাপা রয়েছে এটির উপর। হাতি প্রতিটি ভারতীয়ের জন্য বিশাল ভারতীয় সংস্কৃতির গুরুত্ব বোঝায়। একই সঙ্গে হাতিটি দেখায় স্থিতিশীলতাও।
১৫ অগস্ট বোরোলিন দেওয়া হয়েছিল সম্পূর্ণ ফ্রি-তে : ১৯৪৭ এ দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে আনন্দ উপলক্ষ্যে ১৫ অগস্ট সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে এক লাখেরও বেশি বোরোলিন টিউব বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছিল কোম্পানিটির পক্ষ থেকে। এর দুটি প্লান্ট রয়েছে বর্তমানে এর একটি কলকাতায় (চকবাগি) এবং অন্যটি অবস্থিত গাজিয়াবাদে (মোহন নগর)।
কী কী দিয়ে বোরোলিন বানানো হয় : বছরের পর বছর ধরে বোরোলিন ব্যবহার করছেন প্রায় প্রত্যেকেই,কিন্তু জানেন কি এতে কী কী উপাদান থাকে। এটিতে মূলত রয়েছে তিন ধরণের রাসায়নিকের মিশ্রণ – বোরিক অ্যাসিড, জিঙ্ক অক্সাইড এবং অ্যানহাইড্রোজ ল্যানোসালিন। এই তিনটি একসঙ্গে উপহার দেয় একটি দুর্দান্ত অ্যান্টিসেপটিক ক্রিমের।
বোরোলিনের নামকরণ হল কীভাবে : অ্যান্টি সেপটিক ক্রিমটির নাম কেন বোরোলিন রাখা হল? কারণ রয়েছে এর পিছনেও। বোরো শব্দের প্রথম অংশটি আসলে উদ্ভূত বোরিক পাউডার থেকে যা মূলত একটি অ্যান্টি সেপটিক উপাদান। দ্বিতীয় অংশটি অলিন। অলিন শব্দটি আসলে লাতিন শব্দের ওলিয়ানের পরিবর্তিত যার অর্থ তেল। এই পদ্ধতিতে বোরোলিন নামকরণ করা হয়েছিল এই এন্টিসেপটিক ক্রিমটির।