অবশেষে উত্তরাখণ্ডে ৫০ হাজার মানুষের উচ্ছেদ স্থগিত করল দেশের শীর্ষ আদালত
বেস্ট কলকাতা নিউজ : উত্তর ভারতে এখন ব্যাপক ঠান্ডা। আর তারমধ্যেই ভিটে-মাটি হারানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল উত্তরাখণ্ডের হলদওয়ানির হাজার হাজার মানুষের। বৃহস্পতিবার, সাময়িকভাবে হলেও স্বস্তি পেলেন তাঁরা। এর আগে তাঁদের উচ্ছেদ করার রায় দিয়েছিল উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট। এদিন সুপ্রিম কোর্ট সেই রায়ে স্থগিতাদেশ জারি করল। আদালত বলেছে, “রাতারাতি ৫০ হাজার মানুষকে ভিটে ছাড়া করা যায় না। এটা একটা মানবিক বিষয়। এর একটা কার্যকর সমাধান হওয়া দরকার।”
উত্তরাখণ্ডের হলদওয়ানি রেল স্টেশন সংলগ্ন ২ কিলোমিটার জায়গার মালিকানা নিয়ে এই বিতর্ক। বানভুলপুর এলাকার গফুর বস্তি, ঢোলক বস্তি এবং ইন্দিরা নগরের প্রায় ৪০০০ বাড়িতে, দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে প্রায় ৫০,০০০ মানুষ বসবাস করেন। ঘরবাড়ির পাশাপাশি, এখানকার বহু জমিও তাঁদের বলে দাবি করেন এলাকার মানুষ। এছাড়া এই এলাকায় রয়েছে, চারটি সরকারি স্কুল, ১১টি বেসরকারি স্কুল, একটি ব্যাঙ্ক, দুটি জলের ট্যাঙ্ক, ১০টি মসজিদ, ৪টি মন্দির এবং অসংখ্য দোকানপাট।
২০১৩ সালে প্রথম এই এলাকার দখল নিয়ে বিবাদ আদালতে পৌঁছেছিল। মূল আবেদনটি ছিল বেআইনি বালি খাদানের বিরোধিতা করে। দীর্ঘ মামলার পর, ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট জানিয়েছিল ওই এলাকা ফাঁকা করে দিতে হবে।
প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহারের অনুমতিও দিয়েছিল উচ্চ আদালত। এরপরই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে ২০২৩ সালের ৯ জানুয়ারির মধ্যে ওই এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।
গত কয়েকদিন ধরে আদালত ও জেলা প্রশাসনের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মোমবাতি মিছিলও করেন। কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলিও স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়ান। কংগ্রেসের বক্তব্য, রাজ্য সরকার এই এলাকার বেশ কিছু সম্পত্তি নিলাম করেছে। তাই, এখানকার বাসিন্দারা মোটেই দখলদার নয়। এরপর, উচ্চ আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন সিনিয়র আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ।
এদিন সেই মামলার শুনানি হয় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি এসএ নাজির এবং বিচারপতি পিএস নরসীমার বেঞ্চে।
উচ্চ আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ জারির পাশাপাশি, ওই এলাকায় নতুন কোনও নির্মাণকাজও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই বিষয়ে ভারতীয় রেল এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের জবাব চাওয়া হয়েছে।এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে পরের মাসে। মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনেই চলবে রাজ্য সরকার।