অবশেষে মিলে গেল সুরে সুর, হিন্দু-মুসলিম দুই পক্ষই খুশি সমলিঙ্গ বিবাহ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : বিভিন্ন বিষয়ে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে মত পার্থক্য থাকলেও, সমকামী বিবাহ নিয়ে সুপ্রিম রায়ে খুশি দুই সম্প্রদায়ের নেতারাই। মঙ্গলবার সমকামী বিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব কেন্দ্রকেই দিয়েছে আদালত। আদালতের এই সিদ্ধান্তকে একযোগে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আন্তর্জাতিক কার্যকরী সভাপতি অলোক কুমার এবং শীর্ষস্থানীয় মুসলিম ধর্মগুরু মৌলানা সাজিদ রশিদি। দুজনের মতেই সমকামিতা ভারতীয় সংস্কৃতির অংশ নয়। এটি বিদেশ থেকে আসা সংস্কৃতি। এক কদম এগিয়ে সমকামী সম্পর্ককে অপরাধ হিসাবে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন রশিদি।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে অল ইন্ডিয়া ইমাম অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান, মৌলানা রশিদি বলেছেন, “এটা ভারতীয় সংস্কৃতি নয়। প্রকৃতপক্ষে, এটা একটা পশ্চিমী দেশ থেকে ধার করা ধারণা। ইউরোপীয় এবং পশ্চিমী দেশে এই বিষয়গুলি খোলাখুলিভাবে চলে। কিন্তু ভারতে এই কাজকর্মকে কখনই উত্সাহ দেওয়া বা অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। আমাদের দেশের সমস্ত বৈবাহিক অনুশীলনগুলির শিকড়, আমাদের মূল্যবোধ এবং সামাজিক ঐতিহ্যে প্রোথিত রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের উচিত এই বিষয়ে চূড়ান্ত রায় দেওয়ার আগে, আমাদের মোদ্দা মূল্যবোধ এবং বিশ্বাসগুলিকে সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করা।
তাঁর মতে, ২০১৮ সালে সমকামী সম্পর্ককে যে অপরাধের তালিকা থেকে মুক্ত করা হয়েছিল, সেই সিদ্ধান্তটিও ভুল ছিল। অপরাধের তালিকা থেকে এই প্রথাকে কখনই সরানো উচিত হয়নি। কোনও ব্যক্তির পক্ষে তাঁর সমলিঙ্গের অন্য কাউকে বিয়ে করা অস্বাভাবিক। কারণ, প্রকৃতি ছেলে এবং মেয়েদের আলাদাভাবে তৈরি করেছে। তিনি আরও বলেছেন, ভারতীয় সংস্কৃতিকে ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টাতেই সমকামী বিবাহের সুপ্রিম অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। আমি সুপ্রিম কোর্টকে বলব এই ধরনের কাজকর্মকে অপরাধ বলে ঘোষণা করতে।”
অন্যদিকে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা অলোক কুমার বলেছেন, “দুটি ছেলে বা দুটি মেয়ের মধ্যে সম্পর্ককে বিয়ে হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া যায় না বলে সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণ করায় আমি খুশি।” এদিন সমকামী বিবাহকে আইনি বৈধতা না দিলেও, সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণ করেছে, সমকামী দম্পতিরা লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতেই পারে। তাঁদের নিজেদের পছন্দমতো সঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার আছে তাঁদের। তবে সন্তান দত্তক নেওয়ার প্রশ্নে, দ্বিমত পোষণ করেছেন ৫ বিচারপতি। প্রধান বিচারপতি এবং বিচারপতি এসকে কওল সমকামী দম্পতিদের দত্তক নেওয়ার অধিকার দেওয়ার পক্ষে ছিলেন। কিন্তু, বিচারপতি রবীন্দ্র ভাট, বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি নরসীমা এর বিরুদ্ধে মত দেন।