অবশেষে সাফল্য জটিল অপারেশনে, ঝাড়গ্রামে ভিড় আদরের ‘পুচকু’কে বাড়ি ফেরাতে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : কোভিড কী আমাদের থেকে শুধুই কেড়ে নিয়েছে? ঘর বন্দি করে কি ধ্বংস করছে আমাদের মানসিক স্বাচ্ছন্দ ? হয়ত নয়! প্রত্যেক খারাপেরই কিছু না কিছু ভালো থাকে কোথাও না কোথাও! কোভিডের ভয় আর স্বার্থপরতার মাঝে পুরো ঝাড়গ্রাম দৃষ্টান্ত রাখল সেরকমই এক ‘ভালো’ কাজের। মহামারির মাঝেই বাঁচাতে গোটা ঝাড়গ্রাম এগিয়ে এল জটিল রোগে আক্রান্ত এক শিশুকে। ঝাড়গ্রামের পুচকু বাড়ি ফিরছে সম্প্রতি নিজের জটিল অসুখ সারিয়ে। এমনকি বেলুন ফুল দিয়ে গাড়িও সাজানো হল তাকে অভ্যর্থণা জানাতে ।
জন্মের পর থেকেই হৃদপিণ্ডে ফুটো মূলত ছোট্ট রণদীপ ওরফে পুচকুর। শুধু তাই নয়, প্রকৃতির বেনিয়মে স্থান অদলবদল করেছে ধমনী এবং শিরাও। বাবা পেশায় সম্মানও টোটোচালক,পরিবারের কাছে জটিল অস্ত্রোপচার করার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ নেই । কিন্তু তাতে কী? ঝাড়গ্রামের মানুষ রয়েছে মানুষের পাশেই। ঝাড়গ্রামের মানুষ সামাজিকতা রক্ষা করছেন মহামারীর সময় শারীরিক দুরত্ববিধি মেনেই।
গত ২৯ জুন সন্দীপ সেনগুপ্তের স্ত্রী আশালতা পুত্রসন্তানের জন্ম দেন গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। পরামর্শমতো দু’সপ্তাহ বাদে ফের চিকিত্সকের কাছে গেলে তাঁরা জানতে পারেন, শিশুটির হৃদযন্ত্রে কিছু একটা সমস্যা রয়েছে। এরপরই গত শুক্রবার শিশুটির জ্বর এবং শ্বাসকষ্টতে শুরু হয়। জেলা হাসপাতালের নবজাতক বিশেষজ্ঞ সুদীপ রায় জানান, খুবই বিরল রোগে ভুগছে শিশুটি। তার শিরার জায়গায় ধমনী এবং ধমনীর জায়গায় শিরা রয়েছে। একইসঙ্গে রয়েছে হৃদযন্ত্রে ফুটোও।
রাজ্য জুড়ে যখন সংবাদমাধ্যমে প্রায় প্রত্যেকদিন জায়গা করে নিচ্ছে রাজনৈতিক হিংসার খবর। ঠিক তখনই রাজনৈতিক দল মতের উর্ধ্বে উঠে উদ্যোগ নিয়ে প্রায় ফেসবুক সহ একধিক সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে রনদীপের জন্য একলক্ষ টাকা তোলেন সাগরিকা দাস, তমাল চক্রবর্তী, প্রতীক মিত্র, ভিকি দে-র মতো কিছু মানুষ। এগিয়ে আসেন এলাকার এমএলএ ও মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাও।
সবার চেষ্টাতেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে নারায়নার মতো হাসপাতালে রনদীপের চিকিত্সা হয় প্রায় ৫ লক্ষ টাকা খরচ করে।মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেছে সবার আদরের ‘ঝাড়গ্রামের পুচকু’। তাঁকে বাড়ি নিয়ে আসার জন্য ফুল বেলুন দিয়ে গাড়ি সাজিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন ঝাড়গ্রামের অনেকেই।