একাধারে লেখক, সম্পাদক, প্রকাশক, অনুবাদক ও সমাজসেবক হিসেবে পরিচিত ছিলেন কালীপ্রসন্ন সিংহ
বেস্ট কলকাতা নিউজ : কালীপ্রসন্ন সিংহ ছিলেন ঊনবিংশ শতকের এক দীপ্তিমান নক্ষত্র৷তিনি বাঙালি জাতি ও বাংলা সাহিত্যের জন্য এক অতুলনীয় সারস্বত অর্ঘ্য রেখে গেছেন মাত্র তিরিশ বছরের সংক্ষিপ্ত জীবনে। তার জীবনকাহিনিও ছিল বিচিত্র৷ ধনী জমিদার বংশে জন্মগ্রহণ করলেও স্বল্পকালের জীবনেই সমাজে, রাষ্ট্রে এবং সাহিত্যে এমন সব কীর্তি স্থাপন করে গিয়েছেন, যার আলোচনা আমাদের কাছে অপরিসীম এ যুগেও। তিনি ছিলেন একাধারে লেখক, সম্পাদক, প্রকাশক, অনুবাদক ও সমাজসেবক। এমনকি তিনি ছিলেন শিল্প-সাহিত্য- সংস্কৃতির একজন প্রধান পৃষ্ঠপোষকও৷ তিনি চিরস্মরনীয় হয়ে আছেন বাংলা সাহিত্যে তার দুই অমর অবদানের জন্য। সেগুলি হল– বৃহত্তম মহাকাব্য মহাভারতের বাংলায় অনুবাদ, এবং তার বই ‘হুতোম প্যাঁচার নকশা’।তিনি স্মরণীয় একজন লোকহিতৈষী ব্যক্তি হিসাবেও৷ যিনি প্রভূত সাহায্য করেছিলেন চরম দুর্দশাগ্রস্ত বহু মানুষের এবং বাংলা-সাহিত্য আন্দোলনের জন্য।
তার পিতা ছিলেন নন্দলাল সিংহ। তার পিতামহ জয়কৃষ্ণ সিংহ ছিলেন হিন্দু কলেজের একজন পরিচালক। কালিপ্রসন্নের মাত্র ছয় বছর বয়সে মারা যান তার পিতা। বাবু হরচন্দ্র ঘোষ, যিনি নিম্ন আদালতের বিচারক ছিলেন, পিতার মৃত্যুর পর তিনি নিযুক্ত হন কালিপ্রসন্নর অভিভাবক হিসাবে।কালিপ্রসন্ন ভর্তি হয়েছিলেন তত্কালীন হিন্দু কলেজে । ১৮৫৭ সালে তিনি কলেজ ত্যাগ করেন। বাড়িতেই তিনি তার ইংরেজি, বাংলা ও সংস্কৃত শিক্ষা অব্যাহত রেখেছিলেন। তিনি তার ইংরেজির জ্ঞান উন্নত করেছিলেন মিস্টার ক্রিকপ্যাট্রিক (Mr.Kirkpatrick) নামক একজন ইউরোপীয় শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে। পরবর্তী জীবনে তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার অবদান রেখে গেছেন একজন লেখক, সম্পাদক, প্রকাশক, লোকহিতৈষী, সামাজিক কর্মী, এবং শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতির একজন মহান পৃষ্ঠপোষক হিসাবে। কালীপ্রসন্ন সিংহ লিখিত বইগুলি- ‘বাবুনাটক’, ‘বিক্রমোর্বশী’ নাটক, ‘সাবিত্রী-সত্যবান’ নাটক, ‘মালতী-মাধব’ নাটক।