এক ঐতিহাসিক রায় বুলডোজার নীতি নিয়ে , অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশে কী জানাল? বিস্তর জেনে নিন
বেস্ট কলকাতা নিউজ : ‘যথাযথ কারণ ছাড়া কারও বাড়ি কেড়ে নেওয়া যাবে না’, বুলডোজার নীতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের বড় সিদ্ধান্ত। বুধবার বুলডোজার নীতিতে কড়া অবস্থান নিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালত বলেছে, শুধু অপরাধী বা ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার কারণে কোন ব্যক্তির বাড়িতে বুলডোজার চালানো যাবে না। সুপ্রিম কোর্ট তার নির্দেশে বলেছে এমন পরিস্থিতিতে সরকার বা প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ আইনকে উপেক্ষা করে বুলডোজারের মত নীতি নিতে পারবে না। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ কোনও নির্দিষ্ট রাজ্যের জন্য নয়, গোটা দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এমনটাই জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই বুলডোজার নীতিতে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত দেন।
বুলডোজার চালানো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলো সুপ্রিম কোর্ট। বুলডোজার অভিযান নিষিদ্ধ করল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ কোনও একটি রাজ্যের জন্য নয়, গোটা দেশের জন্য প্রযোজ্য। আদালত বলেছে, শুধু অপরাধী বা ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার কারণ দেখিয়ে কারও বাড়ি ভাঙা যাবে না। বুলডোজারের পদক্ষেপে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত কড়া মন্তব্য করে বলেন, শুধু কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন অপরাধের অভিযোগের ক্ষেত্রে সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার বাড়ি ভাঙতে পারবে না। বিনা বিচারে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না। প্রশাসন বিচারের দায়িত্ব নিতে পারে না। বেআইনিভাবে বাড়ি ভাঙা ফলে ওই ব্যক্তিকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলেও এদিনের রায়ে উল্লেখ করেছে শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়েছে যারা এই ধরণের বেআইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।
অবৈধ নির্মাণ অপসারণের সুযোগ দিতে হবে: আদালত আদালত আরও বলেছে, নোটিশের তথ্য জেলা কর্মকর্তাকে (ডিএম) দিতে হবে। অবৈধ নির্মাণ অপসারণের সুযোগ দিতে হবে। কেন বাড়িটি অবৈধ সে তথ্য নোটিশে উল্লেখ থাকতে হবে। স্থানীয় পৌর প্রশাসন কর্পোরেশন বা পঞ্চায়েত সেক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী নোটিশ জারি করবে। বেআইনি পদক্ষেপ নিলে শাস্তি হবে অফিসারদের: বুলডোজার নীতির বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, কোনও ব্যক্তি অভিযুক্ত হলে শুধুমাত্র এই ভিত্তিতে তার বাড়ি ভাঙা আইনের অপব্যবহার। সরকারের এই ধরণের স্বেচ্ছাচারী কর্মকাণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত বলেছে, যেসব সরকারি কর্মকর্তা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে এ ধরনের পদক্ষেপ নেবেন তাদের জবাবদিহি করতে হবে।
বিচারপতি গাভাই এদিন মন্তব্য করেন ভারত একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ, আমরা যা সিদ্ধান্ত নিই, তা সকল নাগরিকের জন্য প্রযোজ্য। কোনো একটি ধর্মের জন্য আলাদা আইন থাকতে পারে না। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, রাজ্যে আইনের শাসন থাকতে হবে। কোন ব্যক্তির সম্পত্তি যথেচ্ছভাবে দখল করা যাবে না। কেউ দোষী হলেও আইনগতভাবে তার বাড়ি ভেঙে দেওয়া যেতে পারে না।
ক্ষতিপূরণ দিতে বলেছেন এসসি : সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, যদি কোনো ব্যক্তির বাড়ি নির্বিচারে ভেঙে দেওয়া হয়, তাহলে তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া বুলডোজার চালানো অসাংবিধানিক। একজনের ভুলের জন্য পুরো পরিবারকে শাস্তি দেওয়া যায় না। একজনই আসামি হলে পুরো পরিবারের কাছ থেকে বাড়ি কেড়ে নেওয়া হবে কেন? প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। মৌলিক অধিকার রক্ষা করা রাজ্যের দায়িত্ব! অবসরের আগে ‘বুলডোজার ন্যায়বিচার’ নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়েরও ‘ তিনি জানান বুলডোজার চালানোর আগে অভিযুক্তের কথা শোনা প্রয়োজন’
সুপ্রিম কোর্ট আরো বলেছে, বুলডোজার চালানোর আগে অভিযুক্তের কথা শোনা প্রয়োজন। নিয়ম অনুযায়ী নোটিশ জারি করতে হবে। নোটিশ সম্পর্কে তথ্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকেও তথ্য দিতে হবে। অভিযুক্তদের অবৈধ নির্মাণ অপসারণের সুযোগ দিতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে বলেছে, সরকারি জমি দখল করলে এই নির্দেশ প্রযোজ্য হবে না। উচ্ছেদ অভিযানের ভিডিওগ্রাফি করতে হবে। জনগণকে নিজেদের অবৈধ নির্মাণ অপসারণের সুযোগ দিতে হবে। নির্বিচারে বাড়ি ভাঙা আইনের লঙ্ঘন।