এক বছরেই রাজ্যে চালু হয়েছে সাত হাজার প্রাইভেট ল্যাব-পলিক্লিনিক! প্রশ্ন উঠলো গুণগত মান নিয়েও
বেস্ট কলকাতা নিউজ : মাত্র এক বছরে রাজ্যজুড়ে চালু হয়েছে রোগ ও রক্তপরীক্ষার সাত হাজার প্রাইভেট ল্যাব ও পলিক্লিনিক! স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট (সিই) লাইসেন্স পাওয়া এই বিপুল সংখ্যক ল্যাব, ক্লিনিক কি আদৌ গুণগত মান বজায় রেখে চলছে? চলা সম্ভব? ওয়াকিবহল মহল সূত্রের খবর, বড়, মাঝারি ডায়গনস্টিক চেইন এবং হাতেগোনা কিছু নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান বাদ দিলে বড় অংশের ল্যাবই ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের আশপাশে এবং অথবা পাড়ায় পাড়ায়। ‘কমিশন’ প্রথায় এজেন্টদের কাজে লাগিয়ে যেন তেন প্রকারেণ নমুনা সংগ্রহ করছে তারা। সেই নমুনা তিন থেকে চার হাত ঘুরে আসছে ল্যাবে। ফলে সংগৃহীত রক্ত বা দেহরসের গুণগত মান বজায় থাকা কার্যত অসম্ভব। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের একটি নামজাদা রোগ ও রক্ত পরীক্ষাকেন্দ্রের কর্ণধার বলেন, ‘ভিড় বাড়াতে চিকিৎসক ও এজেন্ট মিলিয়ে ৫০-৬০ শতাংশ পর্যন্তও কমিশন দিচ্ছে বেশ কিছু ছোটো ল্যাব।’

শহরের আর এক ডায়গনস্টিক চেইনের কর্তা বলেন, ‘রোগীর কাছ থেকে সংগৃহীত নমুনা ট্রেন, বাস, অটো করে এক হাত থেকে অন্য হাতে ঘুরছে। এমনও ঘটছে, বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহের পর তা ট্রেনে এক প্যাথোলজি ল্যাবের কর্মীর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। ভিড়ে ঠাসা ট্রেন স্টেশনে থামতে না থামতেই প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা আর এক কর্মীর হাতে তিনি তুলে দিচ্ছেন স্যাম্পল। তিনি সেই নমুনা নিয়ে বাইকে করে ছুটছেন ল্যাবের দিকে। ভাবুন, সকাল ৬টা-৭টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ল্যাবে পৌঁছোতে বেজে যাচ্ছে সন্ধ্যা ৬টা। এ ধরনের নমুনাকে আমরা বলি টারবিড স্যাম্পল (ঘোলাটে নমুনা)। এমন উদাহরণ গুচ্ছ গুচ্ছ। কোল্ড চেইন মানা হচ্ছে না। এভাবে আসা বহু নমুনাই নষ্ট হয়ে যায়। তার আবার পরীক্ষা!’ আর এক কর্তা বলছিলেন, ‘বহু ল্যাবে প্যাথোলজিস্ট বা রেডিওলজিস্টের নাম ছাপা সার্টিফিকেট থাকছে। তাঁর আসার নামগন্ধ নেই। যা করার করছেন ল্যাবরেটরি টেকনোলজিস্টরা। রিপোর্টের সময় আঁকিবুকি এঁকে সই করে দেওয়া হচ্ছে। কে যাচ্ছে দেখতে!’

