কমবয়সিরা ফাঁদে পড়ছেন অবৈধ কল সেন্টারে কাজের টোপে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : ভাড়া করা ছোট্ট একটি ঘর। একের পর এক কম্পিউটার, ল্যান্ড ফোন, মোবাইল সাজানো তার ভিতরে । কমবয়সিদের আসা-যাওয়া সেখানে লেগেই রয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানে চলে ‘কারবার’। গত কয়েক মাসে পুলিশ এমনই কয়েকটি কল সেন্টারে হানা দিয়ে বেআইনি কারবারের হদিস পেয়েছে। গত পাঁচ মাসে কলকাতা ও বিধাননগরের পুলিশের হাতে ১৫১ জন গ্রেফতার হয়েছেন ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা ওই সমস্ত কল সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায়।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে-র মাঝামাঝি পর্যন্ত কলকাতায় ১৩টি বেআইনি কল সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ৮৪ জন। একই সময়ের মধ্যে বিধাননগর পুলিশ সাতটি বেআইনি কল সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে গ্রেফতার করেছে ৬৭ জনকে।
কী ধরনের কাজ করত ওই সব কল সেন্টার? তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, ওই সব কল সেন্টার থেকে প্রতারণা চলত কখনও ভিন্ দেশে, কখনও বা এ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ফোন করে। কখনও ফোনে প্রযুক্তিগত সাহায্য দেওয়ার কথা বলা হত, আবার কখনও মোবাইল টাওয়ার বসানোর নামে দেওয়া হত মোটা টাকার টোপ। এ সবের ফাঁদে ফেলেই টাকা হাতিয়ে নেওয়া হত। ইউরোপের একাধিক দেশে ফোন করেও প্রতারণার কারবার চলত প্রযুক্তিগত সাহায্য দেওয়ার নামে। গত কয়েক মাসে বেআইনি কল সেন্টারের হদিস মেলে একাধিক অভিযোগের তদন্তে। পুলিশি অভিযানে ব্যবস্থাও নেওয়া হয় তাদের বিরুদ্ধে।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, কলকাতার পাশাপাশি বেআইনি কল সেন্টারের রমরমা কারবার দেখা গিয়েছে বিধাননগর পুর এলাকাতেও । সল্টলেক এবং কলকাতার বহু বাড়ির একাংশ কাফে, স্পা, গেস্ট হাউস অথবা কল সেন্টার হিসেবে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। অথচ, ভাড়া দেওয়া অংশে আসলে কী কাজ হচ্ছে, বাড়ির মালিক তার খোঁজও রাখেন না। ফলে, পুলিশের খাতাতে ও এ ভাবে চলা কল সেন্টারের খোঁজ থাকছে না। তদন্তকারীরা এ-ও জানাচ্ছেন, অনেক সময়ে ভুয়ো কল সেন্টারে হানা দিয়ে দেখা গিয়েছে, কর্মীদের অনেকেই অবগত নন প্রকৃত ব্যবসা সম্পর্কে ! উপর মহল থেকে তাঁদের যা কাজ দেওয়া হচ্ছে, তাঁরা তা-ই করছেন।
বিধাননগর পুলিশের এক আধিকারিক বললেন, ‘ অনেক কমবয়সি ছেলেমেয়ে অবৈধ কারবারের ফাঁদে জড়িয়ে পড়ছেন ‘অবৈধ কল সেন্টারে মোটা বেতনের লোভে। কিছু বুঝলেও চুপ থেকে নিজের বিপদ ডেকে আনছেন। এ সব ক্ষেত্রে সন্দেহজনক কিছু দেখলে বা বুঝলেই পুলিশকে জানানো উচিত।’’