কী কী হয়ে থাকে পুরীর স্নানযাত্রা উৎসবের আয়োজনে? জানুন বিশেষ দিনের মাহাত্ম্য সম্পর্কে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : কেন পালন হয় স্নানযাত্রা উৎসব? স্নানযাত্রার পরেই নাকি জ্বর আসে জগন্নাথদেবের। রথযাত্রার আগে স্নানযাত্রার মাহাত্ম্য কী? জগন্নাথদেব হলেন শ্রীকৃষ্ণের আর এক রূপ। পুরীতে স্নানযাত্রার আয়োজনে কী কী থাকে? শ্রীক্ষেত্রে একবার জগন্নাথ দর্শনে কোন বিপদ কাটবে আপনার জীবনে? আষাঢ় মাস মানেই রথযাত্রা। তার আগে জ্যৈষ্ঠ শেষে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা। কিন্তু কেন এই উৎসবের পরই জগন্নাথদেবের জ্বর আসে? এই উৎসবের মাহাত্ম্য জানুন। জগন্নাথদেব আপনাকে রক্ষা করবেনই।
সকালে গর্ভগৃহ থেকে শোভাযাত্রা করে স্নান মণ্ডপে আনা হয় জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রাকে সেখানে ১০৮ ঘড়া জলে স্নান করানো হয় বিগ্রহকে। এরপর ১৫ দিন ধরে চলে বিশ্রাম পর্ব। ভক্তদের কথায় স্নানের পর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে জগন্নাথদেবের। লেপ-কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকেন জগতের নাথ। এই সময় করা হয় অঙ্গরাগ অর্থাৎ ভেষজ রং দিয়ে জগন্নাথ দেবকে রাঙানো হয়। এই পর্বে গর্ভগৃহের দরজা বন্ধ থাকে। কবিরাজি পাঁচন খেয়ে জ্বর ছাড়ে জগন্নাথের। তার পর হয় নবযৌবন উৎসব। পরদিন রথে চেপে মাসির বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রা।
প্রতিবছর নিয়ম -রীতি মেনে কেন পালন হয় এই উৎসব?
এই তিথিতেই মর্ত্যে আবির্ভাব হয়েছিলেন জগন্নাথদেব। শাস্ত্র অনুসারে জ্যৈষ্ঠমাসের পূর্ণিমা তিথিতে স্বয়ম্ভু মনুর যজ্ঞের প্রভাবে জগন্নাথ আবির্ভূত হয়েছিলেন। তাই এই তিথিকে জগন্নাথদেবের জন্মদিন হিসেবে পালন করার নির্দেশ দেন স্বয়ং মনুই। সেই জন্মদিন উপলক্ষ্যেই এই বিশেষ স্নান উৎসব পালিত হয়ে আসছে।
কদিন পরেই রথে চড়ে মাসির বাড়ি যাবেন জগন্নাথ। তার আগে শ্রীধামে কীভাবে পালন হয় স্নানযাত্রা উৎসব? মহাস্নানের আগে অবধি রত্নবেদীতেই থাকেন জগন্নাথ। প্রথমে জগন্নাথ, তারপর বলরাম, শেষে সুভদ্রাকে পুষ্পাঞ্জলি দেন মন্দিরের সেবায়েতরা। তারপর তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় স্নানবেদীতে। সেখানে মঙ্গল আরতি ও সূর্যপুজোর পর তিনজনকে মহাস্নানের জন্য প্রস্তুত করা হয়। মন্দিরের দক্ষিণের দরজায় রয়েছে কুয়ো। সেই কুয়ো থেকে তোলা হয় একশো আট ঘটি জল। সেই জলেই স্নান করেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা। স্নানের পর জগন্নাথ ও বলরামের হাতিবেশ হয়ে থাকে। স্নানযাত্রার পর থেকে ১৫ দিন পুরীর মন্দিরের দরজা সাধারণের জন্য বন্ধ থাকে। স্নানমঞ্চে নিয়ে আসার সময় চামর ও তালপাতা দিয়ে তিন দেবতাকে বাতাস করা হয়।
পুরীকে মর্তের বৈকুণ্ঠ বা দ্বারোকা বলে মনে করা হয়। স্নান যাত্রার পরেই শুরু হয় রথযাত্রার প্রস্তুতি। স্নানযাত্রার ১৫ দিন মনে করা হয় জ্বর সারিয়ে একটি নির্দিষ্ট দিনে সুস্থ হয়ে চোখ খুলবেন জগন্নাথদেব। তারপর তিনি দর্শন দেন। যাঁরা এই স্নানযাত্রা দর্শন করতে পারবেন বলা হয় অশ্বমেধ যজ্ঞের সমান ফল লাভ করবেন যদি কেউ ভক্তিসহকারে একবার স্নানযাত্রা মহোৎসব দর্শন করেন তিনি এই সংসারের বন্ধন থেকে মুক্তি লাভ করবেন। এমনই বিশ্বাস ভক্তদের। জগতের ঈশ্বর বলা হয় জগন্নাথ দেবকে। জগন্নাথ মন্দির হিন্দুদের চার ধামের অন্যতম। এই মন্দিরে ভগবান জগন্নাথকে শ্রীবিষ্ণুর প্রতিরূপ বলে মনে করা হয়।