কেন্দ্রের মোদী সরকারের অবশেষে কৃষি আইন প্রত্যাহার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই
বেস্ট কলকাতা নিউজ : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীর উদ্দেশে বড় ঘোষণা করেন গত শুক্রবার গুরুনানক জয়ন্তীতে।এমনকি তিনি বলেন বিতর্কিত তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করার কথাও। এরপরেই দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে ক্ষমা চেয়েই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “হয়তো কোনও খামতি রয়ে গিয়েছে আমাদের প্রচেষ্টাতেই। সেই কারণেই আমরা বোঝাতে পারিনি কৃষকদেরকে। আমি গোটা দেশকে জানাচ্ছি যে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করার। চলতি মাসের শেষেই যে সংসদ অধিবেশন শুরু হচ্ছে, তাতে শেষ হবে কৃষি আইন প্রত্যাহার করার যাবতীয় কাজ। আন্দোলনরত কৃষক ভাইদের আমি অনুরোধ করছি, এ বার আপনারা যে যার ঘরে ফিরে যান, আপনাদের চাষের জমিতে ফিরে যান। আসুন আমরা সবাই মিলে সূচনা করি এক নতুন অধ্যায়ের।
”তবে কেবল আইন প্রত্যাহারই নয়, প্রধানমন্ত্রী মোদী জিরো বাজেট কৃষিকাজ প্রকল্পের ঘোষণাও করেন কৃষকদের জন্য । কিন্তু অস্বস্তি কাটছিল না প্রধানমন্ত্রী কৃষি আইন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করলেও। কারন আন্দোলনকারী কৃষকদের চল্লিশটি সংগঠনের যৌথ মঞ্চ হল সংযুক্ত কিষান মোর্চা৷ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কৃষকরা আগামী ২৯ নভেম্বর পূর্ব নির্ধারিত ট্র্যাক্টর মিছিল এবং লখনউ মহাপঞ্চায়েতে অংশ নেবেন৷ এ দিনের বৈঠকের পর কৃষক নেতারা জানিয়েছেন, ‘লখনউয়ের মিছিল পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ীই হবে৷ ২৬ নভেম্বর গাজিপুর- সিঙ্ঘু সীমান্তে বিক্ষোভ এবং ২৯ নভেম্বর ট্র্যাক্টর মিছিল করা হবে৷ শুক্রবার একপেশে বক্তব্য রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ কিন্তু আমাদের আন্দোলন ততক্ষণই চলবে আমরা যতক্ষণ না সন্তুষ্ট হচ্ছি৷’
এমন পরিস্থিতিতে এক প্রকার চাপ বাড়ছিল মোদি সরকারের উপরেই। আর এর জেরেই কেন্দ্র তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার সংক্রান্ত বিল আনতে চেয়েছিল সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই। সোমবার থেকেই শুরু হয়েছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। আর ‘কৃষি আইনসমূহ প্রত্যাহার বিল, ২০২১’ সংসদে পেশ করা হয়েছে অধিবেশনের প্রথম দিনেই।তিন কৃষি আইন বাতিল করা হবে মূলত এই বিলের মাধ্যমেই।উলেখ্য, সংসদে পাশ হওয়ার পর তিন কৃষি আইন তৈরি হয়েছিল গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে। আর তারপর থেকেই প্রবল বিক্ষোভ শুরু করেছিল কৃষকদের একটি অংশ। আইন পাশের বিরোধিতা করে এমনকি কৃষকদের একাংশ দিল্লি সীমান্তে ক্রমাগত আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন দীর্ঘ এক বছর ধরেও।
এদিকে একাধিকবার কেন্দ্রের তরফে এই আইনগুলির সুবিধার কথা বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছিল বিক্ষোভরত কৃষকদের। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। এরই মধ্যে গুরু নানকের জন্মজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণে একেবারে অপ্রত্যাশিতভাবে তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেন।