কেন শুধু বেগুনিই হয় ক্যাডবেরি চকলেটের প্যাকেজিংয়ের রঙ ? যে কেউ অবাক হবেন কারণ জানলে পরে

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : চকলেটের নামে জিভে জল আসে না এমন মানুষ পাওয়া ভার। আর তা যদি ক্যাডবেরি হয় তবে খুশ আট থেকে আশি সকলেই। প্যাকেজিংয়ের কারণে দোকানের শো কেস থেকে এই চকলেট খুঁজে পেতে সময়ও লাগে না। শিশুরাও চিনে নিয়ে আঙুলে ইঙ্গিত করে সহজেই। কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন যে ক্যাডবেরি চকলেটের প্যাকেজিংয়ের রঙ বেগুনিই হয় কেন?

ক্যাডবেরি চকলেটের প্যাকেজিংয়ে এই বেগুনি রঙের ব্যবহার আজকের নয়। এই রঙের ব্যবহার একশো বছরেরও বেশি। এই চকলেটের পেছনে রয়েছে রাজকীয় গরিমা। তার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে দীর্ঘ আইনি লড়াই। চলুন, কোন পথে একমাত্র ক্যাডবেরি এই বেগুনি রঙ পেল তা জেনে নেওয়া যাক। ১৯০৫ সালের জুন মাসে যুক্তরাজ্যে কেডবেরি একটা মিল্ক বার তৈরি করে। উন্নত দুধ থেকে তা তৈরি করে তারা। এটি অন্যান্য চকলেট বার থেকে আলাদা। গ্রোজ ক্যাডবেরি জুনিয়র এটির দেখাশোনা করেন। ১৯১৪ সালে ক্যাডবেরি প্রথম সারির চকলেট কোম্পানি হিসেবে পরিচিতি পায়। ওই সাল থেকেই ক্যাডবেরি কোম্পানি বেগুনি রঙ ব্যবহার করছে।

রানী ভিক্টোরিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই এই রঙের ব্যবহার শুরু। এই রঙ বরাবরই ক্যাডবেরিকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে আলাদা করেছে। ক্যাডবেরির পথ চলা শুরু তারও অনেক আগে। ১৮৫৪ সালে ক্যাডবেরি কোম্পানিকে রাজকীয় পরোয়ানা অর্থাৎ রয়েল ওয়ারেন্ট দেওয়া হয়েছিল। ক্যাডবেরি হয়ে ওঠে ব্রিটিশ রাজার জন্য সরকারি কোকো এবং চকলেট প্রস্তুতকারক। ১৯২০ সালে পুরো ডেয়ারি মিল্ক রেঞ্জ হয়ে ওঠে বেগুনি-সোনালি রঙ। এরপর ২০০৪ সালে, ক্যাডবেরি চকলেট প্যন্টোন ২৮৬৫সি রঙটি ট্রেডমার্ক করার আবেদন জানায়। এর তীব্র বিরোধিতা করে প্রতিদ্বন্দ্বী নেসলে কোম্পানি। নেসলে যুক্তি দেয়, একটি রঙ কোনও এক কোম্পানির হতে পারেনা। কিন্তু ২০১২ সালে, বিচারক কলিন বিরস নেসলের আবেদন খারিজ করে দেয়। তিনি বলেন, প্রমাণগুলি খুবই স্পষ্ট যে বেগুনি রঙটি ক্যাডবেরির মিল্ক চকলেটের জন্য। এই রায়ের অর্থ হল,এই বেগুনি রঙটি এবার থেকে মিল্ক চকলেট, বার সহ তাদের প্রোডাক্টের জন্য একমাত্র ক্যাডবেরিই ব্যবহার করতে পারবে।

কোকোয়া গাছের বীজ থেকে তৈরি নানা প্রকার প্রাকৃতিক ও প্রক্রিয়াজাত খাবার চকলেট। গ্রীষ্মমন্ডলীয় দক্ষিণ আমেরিকার নিম্নভূমির স্থানীয় উদ্ভিদ কোকো। অন্তত তিনশ’ বছর মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোতে এর চাষ করা হচ্ছে। এর ব্যবহারের সবচেয়ে পুরনো লিখিত প্রমাণ হল ১১০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের। বেশিরভাগ মেসোআমেরিকান লোকজনই চকলেট পানীয় তৈরি করত। যার মধ্যে আছে মায়া ও আজটেকরা। যারা নামে একটি পানীয় তৈরি করেছিল। নাহুয়াতি ভাষায় যে শব্দটির মানে দাঁড়ায় তেতো পানীয়। কোকো গাছের বীজের তীব্র তেতো স্বাদ আছে। তাই চকলেটের ফ্লেভার তৈরি করবার জন্যে অবশ্যই একে প্রক্রিয়াকরণ করে নিতে হয়।

কয়েক হাজার বছর আগে কোকো গাছের বীজ থেকে পানীয় তৈরি করেছিলেন মানুষজন। সেই কোকো থেকে তৈরি চকলেটের আজ হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা চলছে বিশ্বজুড়ে। সেই ব্যবসায় ক্যাডবেরির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে গিয়েছে তার বেগুনি রঙের মোড়ক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *