গুজরাটে চরম পরিণতি বাংলার দুই যুবকের! পরিবার নিয়তিকেই দুষছে কপাল চাপড়ে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা! দুঃখের সংসারে সুখের খোঁজ আনতে গুজরাটে কাজে গিয়েছিলেন বাংলার দুই যুবক। তবে সেখানে রোজগারের বদলে চরম পরিণতি দু’জনেরই। রূপো চুরির অভিযোগে বাংলার দুই পরিযায়ী শ্রমিককে গুজরাটে নৃশংসভাবে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ।
পূর্ব বর্ধমানের কালনার এই ঘটনা এখন জোর চর্চায়। দুই যুবকের এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে চোখে জল পরিবারের সদস্যদের। জানা গিয়েছে, ভালো রোজগারের আশায় মাস দু’য়েক আগে কালনার দুই যুবক গুজরাটে কাজে গিয়েছিলেন। শিক্ষানবিশ হিসাবে সেখানকার রাজকোটের একটি সোনা-রুপোর দোকানে তাঁরা রূপোর চাঁদি তৈরির কাজে যোগ দেন। সেই দোকান থেকেই রূপো চুরি যায়। দোকান মালিক সন্দেহ করেন এই দু’জনকেই।
এরপরেই গত বৃহস্পতিবার দোকান মালিকের কয়েকজন লোকজন কালনার এই দুই যুবককে নির্মমভাবে মারধর শুরু করে। স্থানীয়রাই পরে পুলিশে খবর দেন। ততক্ষণে অবশ্য দুই যুবকই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। পুলিশ তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় । শুক্রবার সেই খবর তাঁদের বাড়িতে পৌঁছোয়। পাড়া প্রতিবেশীদের দেওয়া টাকায় গাড়ি ভাড়া করে দুই যুবকের পরিবারের সদস্যরা রবিবার গুজরাট রওনা দিয়েছেন।
মৃত এক যুবকের কাকা জানান, তাঁদের পরিবার আর্থিকভাবে বেশ দুর্বল। ভালো রোজগারের আশায় তাঁর ভাইপো ও প্রতিবেশী আরও এক যুবক গুজরাটে কাজে গিয়েছিল। রাজকোটের ওই দোকানে চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গত বৃহস্পতিবার তাঁদের পিটিয়ে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ ওই ব্যক্তির। রাজকোট পুলিশের মাধ্যমে সেই খবর তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, মৃত এক যুবকের বাবা বলেন, ”ছেলে আমার সঙ্গেই দিনমজুরের কাজ করতো। সংসারের স্বচ্ছলতা আনতে ছেলে গুজরাটে কাজে যায়। কিন্তু সেখানে যে ছেলের এমন পরিণতি হবে তা কল্পনাও করতে পারিনি।” মৃত আর এক যুবকের বাবা বলেন, “আমার ছেলে ও আরও এক যুবককে যারা পিটিয়ে মেরেছে তাদের কঠিন শাস্তি হোক,এটাই চাই।”
এবিষয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্যা তথা তৃণমূল নেত্রী আরতি হালদার বলেন, ”গুজরাটে আইনের কোনও শাসন নেই। বাংলার দুই তরতাজা প্রাণ মেরে দিল। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে মৃতদের দেহ আনানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা শোকার্ত পরিবারের পাশে রয়েছি।”