জলের তলায় চাষের জমি টানা বৃষ্টির জেরে,মাথায় হাত পড়ল ভাঙড়ের কৃষকদের
বেস্ট কলকাতা নিউজ : দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা একরকম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ৷ এমনকি ধান ও সবজি চাষেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে চাষের জমিতে জল জমে যাওয়ায়৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনার শস্য ভাণ্ডারের অন্যতম প্রধান উত্সই হল এই ভাঙড়৷ এমনকি প্রচুর সবজি ও ফুলেরও চাষ হয় ভাঙড়ের শানপুকুর, ভোগালি, পোলের হাট, ভগবানপুর, চন্দনেশ্বর, শাঁকশহর, তাড়দহ, মৌসল-সহ বিভিন্ন এলাকায়৷ টানা বৃষ্টির জেরে ধান চাষের পাশাপাশি এমনকি মাঠেই পচে যাচ্ছে পটল, ঝিঙে, উচ্ছে, বেগুন-সহ বিভিন্ন ধরনের গ্রীষ্মকালীন ফসলও৷ এছাড়াও চাষের জমিগুলি কার্যত জলাশয়ে পরিণত হয়েছে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির জেরে৷ এদিকে ডুবে গিয়েছে ক্ষেতের ফসলও৷ এর ফলে কৃষকদের পড়তে হয়েছে চরম আর্থিক ক্ষতির মুখেও৷ প্রসঙ্গত, ভাঙড়ে উত্পাদিত সবজি ও ফুল বিক্রির জন্য পাঠানো হয় কলকাতা-সহ লাগোয়া শহরতলির বাজারগুলিতে৷ এছাড়া, কৃষকরা পণ্য রফতানি করেন দুর্গাপুর, রায়গঞ্জ, শিলিগুড়িতেও৷ এমনকী, দুবাই, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াতেও পাঠানো হয় ভাঙড়ের ফুল, সবজি ও ফল গাছের চারা৷ সেইসব চারাও নষ্ট হয়ে গিয়েছে টানা বৃষ্টির জেরে৷
মূলত প্রচুর ফুল চাষ হয় ভাঙড়ের চিলেতলা, ভুমরু, বানিয়াড়া, পাঁচগাছিয়া, পোলের হাট, কালিকাপুর-সহ বিভিন্ন এলাকায়৷ পুজোর আগে গাঁদা, রজনীগন্ধা, গোলাপ চাষ করেছিলেন এইসব এলাকার বহু চাষি৷ কিন্তু ফুল চাষেরও দফারফা হয়ে গিয়েছে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে ৷ ভাঙড়-২ ব্লকের প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে পটল, ঝিঙে, উচ্ছে, বেগুন, লাউ, কুমড়ো-সহ বিভিন্ন আনাজ চাষ করা হয় ৷আমন ধান চাষ করা হয় ব্লকের প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে। বৃষ্টিতে জলের তলায় চলে গিয়েছে ১০ শতাংশেরও বেশি জমির আনাজ ও ধান৷ অন্যদিকে, জলের তলায় চলে গিয়েছে ভাঙড়-১ ব্লকের ৫৯০ হেক্টর জমির মধ্যে ২০০ হেক্টর জমির আমন ধানের বীজতলা৷ প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে আমন ধানের ফলন৷ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে প্রায় ৩০০ হেক্টর জমির আনাজও৷
ভাঙড়ের স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, যদি আর বৃষ্টি না হয় এবং জমি থেকে জল দ্রুত নেমে যায়, তা হলে কিছুটা হলেও কম ক্ষতির আশঙ্কা৷ কিন্তু আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, এখনও নিম্নচাপ সরেনি দক্ষিণবঙ্গের উপর থেকে৷ দক্ষিণবঙ্গ-সহ গোটা রাজ্যেই বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে আগামী বুধবার থেকেই৷ ভাঙড়ের কৃষকরা আর তাতেই প্রমোদ গুণছেন৷ তাঁদের সাফ কথা, তাঁদের পথে বসতে হবে আবহাওয়ার এই প্রকোপ চলতে থাকলে৷ সেক্ষেত্রে আর্থিক ক্ষতি সামাল দেওয়া যাবে না কোনও রকম সরকারি সহযোগিতা না পেলে৷