তীব্র গ্রীষ্মের দাবদাহে অতিষ্ঠ জননীবন, এক রকম ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা আবাল বৃদ্ধবনিতার
পল মৈত্র, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ প্রায় সপ্তাহ জুড়ে চলা তীব্র গ্রীষ্মের দাবদাহে জনজীবন এক রকমের অতিষ্ঠ হয়ে উঠলো । এই তীব্র দাবদাহে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ারও খবর পাওয়া গেছে। ঘরে বাইরে কোথাও মিলছে না এতো টুক স্বস্তি। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে দেশের ওপর দিয়ে প্রবল তাপ প্রভাবের কারণে এই তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে । এক সপ্তাহের মধ্যে তাপমাত্রা কমার কোনো রকম সম্ভাবনা নেই বলে জানানো হয়েছে।দিন আর রাত নেই। তীব্র গরমের অসহনীয় কষ্ট এখন নিত্য সঙ্গী হয়েছে রাজ্যবাসীর। পঞ্জিকার হিসেবে চলছে বৈশাখের শেষ সপ্তাহ এরপর জ্যৈষ্ঠমাস অর্থাৎ এখনো দেড় মাস বাকি গ্রীষ্মকে বিদায় জানাতে।গ্রীষ্মের গরম ঠিকই রয়েছে কেবল দেখা নেই বৈশাখী ঝড় বা বৃষ্টির। দিনে মাথার উপর প্রখর তপ্ত সূর্য আর রাতে ঘরের মধ্যে গরম বাতাসের ভ্যাপসা অনুভূতি। এক ফোটা স্বস্তি নেই কোথাও। প্রত্যাশা শুধু একটু বৃষ্টির।
গত এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার গড় যেখানে ৩৬ থেকে ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার গড় ২৮-২৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস। অর্থাৎ রাত আর দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য মাত্র ৭ থেকে ৮ ডিগ্রী।আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আরো কিছুদিন রাজ্যবাসীকে এই পরিস্থিতি সহ্য করতে হতে পারে, তবে ফনির পর বায়ু নামের আরেকটি ঝড়ের অপেক্ষায় অপেক্ষারত রাজ্যবাসী সহ জেলাবাসীরা, হাওয়া অফিস আরো জানায় এই সময়ের মধ্যে বৃষ্টির দেখা মেলার সম্ভাবনাও খুব কম।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, গত বছরে একই সময়ে গড় যে তাপমাত্রা ছিল, এ বছর তা গড়ে ৫ থেকে ৬ ডিগ্রী বেশি।এদিকে, শুধু রাজ্য নয়, সারাদেশে দাবদাহের চিত্র একইরকম। কাঠফাটা রোদে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সব শ্রেণির মানুষের জীবনযাত্রা।দাবদাহ থেকে পরিত্রাণ পেতে বৃষ্টির জন্য ভগবানকে কাতর ও করুন ভাবে ডাকছেন অনেকে।গত কয়েকদিনের চলমান তাপ প্রবাহে দক্ষিন দিনাজপুর জেলার মানুষদের পাশাপাশি প্রাণও ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে পশু পাখিদের ও । প্রচণ্ড রোদ ও ভ্যাপসা গরমে একরকম স্থবির হয়ে পড়েছে মানুষের কর্মজীবন। চলতি বছর জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এ অবস্থায় গরম জনিত নানা রোগ-বালাই থেকে মুক্তি পেতে শিশুদের তরল খাবার এবং ঠাণ্ডা জায়গায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্ট চিকিৎসকরা।
প্রখর রৌদ্র ও তাপদাহ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার চেষ্টা করছেন সকলেই। তীব্র দূর্বিসহ দাবদাহের গরমে বিপাকে পড়েছে পথচারী ও খেটে খাওয়া মানুষেরা। জরুরী কাজ না থাকলে ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউই। অনেকেই তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন রাস্তার পাশের শরবত ও আঁখের রস খেয়ে। তবে আপাতত সকলেই এই গরম থেকে রেহাই পেতে বৃষ্টির জন্য চাতক পাখীর ন্যায় অপেক্ষা করছেন তা বলাই বাহুল্য।