ধান-গম চাষ নয়, এখানকার কৃষকরা লাখপতি লঙ্কা চাষ করেই
বেস্ট কলকাতা নিউজ : পাঞ্জাবের সীমান্তবর্তী জেলা ফিরোজপুরের মরিচ চাষীরা অন্যান্য কৃষকদের মতো গম-ধান ফলনের উপরে নির্ভরশীল না থেকে কিংবা ঐতিহ্যবাহী ফসলের উপর নির্ভর না করে সেই চক্র থেকে বেরিয়ে এসে তৈরি করছে সুদর্শন মুনাফা অর্জনের এক উদাহরণ। খুব কম মানুষই জানেন লঙ্কার বড় উৎপাদক হিসেবে ফিরোজপুরের পরিচয়। কিন্তু পাঞ্জাব সরকার সম্প্রতি এই সীমান্ত জেলায় একটি লঙ্কার ক্লাস্টার স্থাপনের ঘোষণা করেছে মূলত তার প্রচারণার কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফসলের প্রচারের জন্য।
কর্মকর্তারা এও বলেছেন যে মরিচ ক্লাস্টার ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের অধীনে,মরিচ চাষীদের একটি দলকে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা হবে মূলত ফসলের গুণমান উন্নত করতে, খরচ কমাতে এবং এর রপ্তানি ও অভ্যন্তরীণ বাজারে তাদের দখল জোরদার করার লক্ষ্যে। পাঞ্জাবে প্রায় ১০,০০০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ করা হয় এবং প্রতি বছর প্রায় ২০,০০০ টন মরিচ উৎপাদিত হয়। পাঞ্জাবে সবচেয়ে বেশি লঙ্কার চাষ হয় ফিরোজপুরে। লঙ্কার চাষের ক্ষেত্রে অন্ধ্রপ্রদেশও দেশের শীর্ষ রাজ্যগুলির মধ্যে একটি।
মরিচ চাষীরা জানান, চাষের খরচ ও অন্যান্য খরচ মিটিয়ে প্রায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয় হয় একর প্রতি মরিচ চাষে। গম ও ধান থেকে প্রতি একরে ৯০ হাজার টাকা আয়ের তুলনায় অনেক বেশি আয় হতে পারে মরিচ চাষের ক্ষেত্রে । লঙ্কার ফসল অক্টোবরের শেষে এবং নভেম্বর মাসে রোপণ করা হয় এবং এটি সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত হয় মার্চের শেষে এবং এপ্রিলের শুরুতে। কিছু কৃষক আগস্ট পর্যন্ত ফসল রোপণ করে রাখে, যার ফলে খরিফ মৌসুমে জল-নিবিড় ধান রোপণের প্রয়োজন হয় না।
কৃষকরা জানালেন তাদের সাফল্যের গল্প : মরিচ ফসলের একজন প্রগতিশীল উৎপাদক মনপ্রীত সিংজানান যে তিনি প্রতি একর ফসল থেকে ২ লক্ষ টাকা আয় করেন। ফিরোজপুরের লুমব্রিওয়ালা গ্রামে তিনি মরিচ চাষ করেন ১০০ একর জমিতে ।মনপ্রীত সিং আরও জানান যে লাল মরিচ প্রতি কেজি ২৩০-২৪০ টাকা আয় করে এবং সবুজ মরিচ প্রতি কেজি ২০-২৫ টাকা দাম পায়। তিনি এও বলেন, ফিরোজপুরের মরিচ এখন বেশ পরিচিতি পেয়েছে এবং রাজস্থানের গঙ্গানগর ও অন্ধ্রপ্রদেশের ব্যবসায়ীরাও এখানে আসতে শুরু করেছে ফসল কিনতে।
গুজরাটের মতো জায়গায় সবুজ লঙ্কার চাহিদা রয়েছে। গাঢ় রঙের সবুজ লঙ্কার সরবরাহ রয়েছে নাগপুর, ইন্দোর এবং ভোপালের মতো জায়গাগুলিতে । ফিরোজপুর জেলার তিনটি ব্লক – গাল খুর্দ, ফিরোজপুর এবং মামদোট মরিচ চাষের জন্য পরিচিত। পাঞ্জাবের হর্টিকালচার ডিরেক্টর শালিন্দর কৌর বলেছেন যে কৃষকদের আয় বাড়াতে এবং খরচ কমাতে গ্রহণ করা হয়েছে ক্লাস্টার উন্নয়ন পদ্ধতি। তিনি বলেন যে হর্টিকালচার বিভাগটি মরিচ চাষীদের সাহায্য করবে এবং রপ্তানি সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ফসলের গুণমান আরও উন্নত করতে সহায়তা করবে।