নানা উৎসব দোলপূর্ণিমা কে কেন্দ্র করে ! কোথায় কেমন দেশজুড়ে হোলির রং ? একবার জেনে নিন
বেস্ট কলকাতা নিউজ : পাহাড় ঘেরা উত্তরপূর্ব থেকে রাজস্থানের রাজকীয় হোলি। রঙের উৎসব ! ফুলন ওয়ালি হোলি কী? দোল ঘিরে দেশের নানা উৎসব সম্পর্কে একবার জেনে নিন।
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, হোলি শুরু হয়েছিল ভারতের বারসানা অঞ্চলে।যার মধ্যে রয়েছে বৃন্দাবন, মথুরা,নন্দগাঁও এবং বারসানা। আপনি জানেন ফুল ওয়ালি হোলি কি? বৃন্দাবনের অন্যান্য উৎসবের সঙ্গে হোলির আগে একাদশীর দিন এটি পালন হয়। সুন্দর ফুলে সাজিয়ে কৃষ্ণমূর্তিকে সাদা রঙের পোশাক পড়ে গোস্বামী পুরোহিতরা পুষ্পবৃষ্টি করেন।
উত্তরপ্রদেশে হোলিতে রঙের সঙ্গে সঙ্গে থাকে লাঠিও।ভাবছেন তো দোল খেলতে লাঠি আবার কী হয়? আসলে এখানের একটা প্রথা অনুযায়ী মহিলারা লাঠি নিয়ে পুরুষদের তাড়া করে তা বলে এমন ভাববেন না যে লাঠি পেটা করা হয়। এটা একটা প্রথা মাত্র।মহিলারা শ্রীকৃষ্ণের গোপিনীদের মতো সাজেন। যোদ্ধাদের দোল খেলা দেখতে হলে দেখতে হবে পঞ্জাবের হোলা মোহল্লা। এ-ও হোলিরই অন্য একরূপ,শিখরা মূলত এই ভাবে দোল উৎসব পালন করে।
মহারাষ্ট্র আর মধ্যপ্রদেশে দোল উৎসব রং পঞ্চমী। সিনেমার পর্দায় এই রং পঞ্চমীর অনেক দৃশ্যই অনেকে দেখেছেন। মানুষের পিরামিড তৈরি করে অনেক ছেলে মিলে গোল করে দাঁড়ায়,তাদের পিঠের ওপর কিছু তারও ওপর কিছু এই ভাবে মানুষের মই বানিয়ে অবশেষে এক জন সব থেকে ওপরে উঠে উঁচুতে বাঁধা দই-এর হাঁড়ি ভাঙে। হোলিকা দহনের পাঁচ দিন পরে হোলি খেলা হয়। নীল সাগরে ঘেরা গোয়ায় বসন্ত উদযাপনই হল- শিগমোগোয়ার পর্যটকরাও এই উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠে।
রাজস্থানের গোলাপী শহর বলা হয় জয়পুরকে ।ভারতে একমাত্র জায়গা যেখানে হোলির সময় রঙের তুলনায় মানুষ আরও রঙিন হয়ে ওঠে। এই সময় জয়পুরে “হাতি উৎসব” বিশ্ববিখ্যাত রাজস্থানের রাজপরিবারের হোলি সবচেয়ে বড় উৎসব।রাজস্থানীদের বিশ্বাস, হোলিকা দহনে অশুভ আত্মা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।উদয়পুরের মেওয়ার রাজপরিবার জমকালোভাবে হোলির উৎসব হয়। প্রতিবছর রাজস্থানের বিকানের, পুষ্করের অলি গলি রঙিন হয়ে উঠে।
খাদি হোলি কুমায়ুন অঞ্চলে খেলা হয়। যার মধ্যে প্রধানত উত্তরাখণ্ডের শহরগুলি রয়েছে। হোলির সময় স্থানীয়রা এক বিশেষ পোশাক পরে ।আর হোলি মানেই বসবে গান বাজনার আসর। হরিয়ানা রাজ্যে হোলি ধুলন্ডি উৎসব নামে পরিচিত । হোলি মানেই সেখানে দেওয়দের বৌদিরা রং মাখিয়ে ভূত করে দেন। এটাই রীতি। হরিয়ানার প্রায় গোটা মাস ধরেই তাই কারোর না কারোর গায়ে রঙ লাগবেই।গুজরাতেও হোলি একটি বড় উৎসব।
পাহাড় ঘেরা ভারতের উত্তর পূর্বে কেমন হয় হোলি উত্সব?অসমে হোলির নাম ফাকুওয়া।এটি বাংলার ‘দোল যাত্রা’-এর মতোই। এখানে উৎসবটি দুই দিনব্যাপী পালিত হয়। প্রথম দিনে মাটির কুঁড়েঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয় । দ্বিতীয় দিন রঙ উৎসব। মণিপুরে, হোলি বা ইয়াওসাং ছয় দিন ধরে চলে। মণিপুরী লোকনৃত্য থাবাল চোংবা নাচ দিয়ে রঙের উৎসবকে উদযাপন করেন তারা।
কে বলে দক্ষিণ ভারতীয়রা হোলি খেলেনা? তবুও ভারতের অনান্য অংশের তুলনায় দক্ষিণ ভারতে হোলির চল অনেকটাই কম।তবুও কিছু কিছু এলাকায় হোলি পালন করা হয়। কেরালের এই উৎসব পরিচিত মাঞ্জালা কুলি নামে। এই উৎসবের শুরুটা হয় গোসরপুরম তিরুমালার কঙ্কনি মন্দিরে।দিল্লির বাসিন্দাদের দোল খেলার জন্য আবির লাগবেই।এমন কোনো কথা নেই। ডিম, কাদা, দেওয়াল রঙের মত কিছু একটা হলেই চলবে।
সবশেষে আসি পশ্চিমবঙ্গের কথায়। বাংলার দোল বসন্তের উৎসব । তাই এখানে হোলি দোল বা বসন্ত উৎসব নামেও পরিচিত। শান্তিনিকেতনের সঙ্গে আবিরের রঙে রাঙা হয়ে উঠে গোটা বাংলা।