পিএইচডির ঢল পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত ক্লাস থ্রি পাশ ঘুঘনি বিক্রেতাকে নিয়ে!কেন জানেন?
বেস্ট কলকাতা নিউজ : পেশায় তিনি ঘুঘনি বিক্রেতা। পড়াশোনা ক্লাস থ্রি র বেশি নয়। দেখতেও আহামরি কিছু নয়, বলা ভালো অতি সাধারণ। অথচ এই ব্যক্তিকে নিয়েই পিএইচডি করছেন পাঁচ জন। কেন জানেন? জানেন কি এমন রয়েছে তাঁর মধ্যে? তিনি হলধর নাগ। ছোটবেলায় অকালে বাবাকে হারিয়ে ছেদ পড়েছিল শিক্ষায়। যে স্কুলে পড়তেন সেখানেই করতেন রান্নার কাজ। পরবর্তী কালে খোলেন ঘুগনির দোকান। কিন্তু এর বাইরেও রয়েছে তাঁর পরিচয়। তিনি পদ্মশ্রী প্রাপক জনপ্রিয় কবি। হলধর নাগের জীবন কাহিনি আপনাকে অনুপ্রাণিত করবেই।
পড়নে সাদা ধুতি ও কুর্তা। পিঠ পর্যন্ত লম্বা তেলজবজবে চুল। পায়ে নেই জুতোও। এমন চেহারার ঘুগনি বিক্রেতা স্বাভাবিকভাবেই কারো নজর কাড়ে না৷ কিন্তু অনেকেই জানেন না অত্যন্ত অনাড়ম্বর জীবন কাটানো এই মানুষটি একজন জনপ্রিয় কবি৷ তাঁর ঝুলিতে রয়েছে পদ্মশ্রী সম্মানও। হলধর নাগের গোটা জীবনটাই গড়িয়েছে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। ১০ বছর বয়সে বাবা মারা যান। হলধর তখন তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্র। অভাবের তাড়নায় পড়াশোনা শিকেয় ওঠে। মিষ্টির দোকানে বাসন ধুয়েছেন। রাস্তায় ঘুগনি বিক্রির মতো জীবনে অনেক কাজই করতে হয়েছে হলধরকে। কিন্তু তাঁর প্রতিভা কখনোই জীবনের কাছে হার মানে নি। যতবারই তিনি কলম ধরেছেন তার হাত থেকে ঝরে পড়েছে সাহিত্যের মণিমুক্তো।
ছোটবেলা থেকেই তিনি কোসলি ভাষায় ছোটগল্প লেখা শুরু করেন। কবিতা চর্চা শুরু করেন একটু বড় হয়ে। ১৯৯০ সালে প্রথম কবিতা ‘ধোদো বরগাছ’ অর্থাৎ বুড়ো বটগাছ স্থানীয় এক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়৷ তারপর তিনি আরো চারটি কবিতা পাঠান ওই পত্রিকায়। সেগুলোও প্রকাশিত হয় একে একে। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি হলধরকে। একের পর এক লেখা প্রশংসা কুড়োয় সাধারণ মানুষ থেকে সাহিত্য সমালোচকদের। তাঁর সমস্ত কবিতা একত্রিত করে ‘হলধর গ্রন্থাবলী’ প্রকাশ করেছে সম্বলপুর বিশ্ববিদ্যালয়। চলছে এই বই এর দ্বিতীয় পর্বের প্রস্তুতিও। এই মুহুর্তে তার লেখা নিয়ে গবেষণা করছেন ৫ জন। ২০১৬ সালে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের হাত থেকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন তিনি। ২০১৯ সালে তিনি সম্বলপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাম্মানিক ডক্টরেট পান।এরপরও মাটিতেই পা রয়েছে। কোনও কিছুতেই বাহুল্য নেই তাঁর। এখনো আগের মতই অনাড়ম্বর জীবন যাপনেই অভ্যস্ত ‘লোক কবি রত্ন’ হলধর নাগ