প্রধান বিচারপতি রামমন্দির মামলার এক অজানা কাহিনি জানালেন সংঘর্ষের ইতিহাস দেখে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : অযোধ্যার রাম জন্মভূমি জমি বিতর্ক মামলার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের যুগান্তকারী রায় দানের পর চার বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। ২২ জানুয়ারি ওই বিতর্কিত জমিতে তৈরি রাম মন্দিরের উদ্বোধন হতে চলেছে। কিন্তু, এখনও এই রায় নিয়ে মানুষের মনে আগ্রহ কমেনি। সাধারণত, যে কোনও মামলার রায় লেখেন কোনও এক বা একাধিক বিচারপতি। আর সেই রায়কে সমর্থন করেন বেঞ্চে থাকা বাকিরা। কিন্তু, রাম মন্দির মামলার ক্ষেত্রে তা হয়নি। কোনও একক বিচারককে এই রায়ের লেখক হিসাবে কৃতিত্ব দেওয়া হয়নি। কেন? সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে, এই মামলার রায় দানের পিছনে লুকিয়ে থাকা কাহিনি জানালেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
উল্লেখ্য ,২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর, এই মামলার রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সময় অবশ্য প্রদান বিচারপতির পদে ছিলেন না চন্দ্রচূড়। তবে, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারকের সাংবিধানিক বেঞ্চের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে প্রদান বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানিয়েছেন, বেঞ্চে থাকা বিচারপতিদের কেউই এই রায়ের কৃতিত্ব বা দায় কোনও ব্যক্তির কাঁধে রাখতে চাননি। তার, পরিবর্তে আদালতের ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বর হিসাবে এই রায়কে উপস্থাপন করার বিষয়ে একমত হয়েছিলেন তাঁরা। প্রধান বিচারপতি বলেছেন, “কোনও রায় ঘোষণার আগে, আমরা সকলেই যেমন সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা করতে বসি, তেমনই এই মামলার ক্ষেত্রেও পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ আলোচনায় বসেছিল। সেই সময় আমরা সকলে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, এই রায় হবে আদালতের রায়। আর তাই, কোনও একক বিচারককে রায়ের লেখক হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। ”
তিনি আরও জানিয়েছেন, আসলে এই মামলাটির সঙ্গে সংঘর্ষের এক দীর্ঘ ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। বেঞ্চে থাকা বিচারপতিদের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থাকলেও, এই ইতিহাসের ভিত্তিতেই সকলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে এই রায় কোনও একক বিচারপতির রায় হওয়ার বদলে আদালতের রায় হবে। তিনি বলেন, “আদালত এক কণ্ঠে এবং এক ধারণায় কথা বলবে। আমরা সকলে শুধু চূড়ান্ত রায়ের ক্ষেত্রেই নয়, রায়ে উল্লিখিত কারণগুলির ক্ষেত্রেও ঐক্যমত হয়েছি, এই বিষয়ে আমরা একটা পরিষ্কার বার্তা দিতে চেয়েছিলাম।” এর থেকে বেশি কিছু জানাতে চাননি প্রধান বিচারপতি।
২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট এই শতাব্দীপ্রাচীন জমি বিতর্ক মামলার রায়ে বলেছিল, হিন্দুদের বিশ্বাস যে ভগবান রাম এই স্থানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং অবিসংবাদিতভাবে তিনি এই জমির মালিক। হিন্দুদের এই অপ্রতিদ্বন্দ্বী বিশ্বাসকে স্বীকার করে, সেই বিশ্বাসের ভিত্তিতেই এই জমির মালিকানা রামলালাকে দেওয়া হয়েছিল। এর পাশাপাশি, মুসলিম পক্ষকে একটি মসজিদ তৈরির জন্য অযোধ্যারই কোনও ভাল জায়গায় ৫ একর জমিদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। রায়ে আরও বলা হয়েছিল, ষোড়শ শতকের তিন গম্বুজওয়ালা বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হিন্দু করসেবকদের ভুল কাজ ছিল। তার প্রতিকার করা আবশ্যক বলে জানিয়েছিল আদালত।