পড়াশোনা চালাতে অন্যের জমিতে কাজ, আগামীদিনে শিক্ষিকা হতে চায় বালুরঘাটের ছাত্রী সুস্মিতা পাহান

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বালুরঘাট : অদম্য ইচ্ছেশক্তি থাকলে কোনও বাধাই যে বাধা নয়, তা-ই ফের প্রমাণ করল বালুরঘাটের কালিকাপুরের আদিবাসী ছাত্রী সুস্মিতা পাহান। এবছর উচ্চমাধ্যমিকে ৪২৮ নম্বর পেয়ে তাক লাগিয়েছে বালুরঘাটের নালন্দা বিদ্যাপীঠের এই ছাত্রী। স্কুল থেকে সে-ই এবছর উচ্চমাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে। তার এই ফলে পরিবারের লোকেরা তো বটেই, খুশি শিক্ষক-শিিক্ষকা এমনকি প্রতিবেশীরাও।

কালিকাপুর গ্রামে বাড়ি সুস্মিতার। মাত্র চার বছর বয়সে বাবা শ্যামল পাহানকে হারিয়েছে সে। মা অন্যের জমিতে দিনমজুরি করে সংসার চালান। পরিবারে আর্থিক অনটন। সেকারণে নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতে মায়ের সঙ্গে অন্যের জমিতে কাজ করে এই কিশোরী। কালিকাপুর থেকে ৮ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে নালন্দা বিদ্যাপীঠে যাতায়াত করত সে। পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ তাকে শক্তি জুগিয়েছে। সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর রাতে চলে পড়াশোনা। তার বোন সংগীতা পাহানও একই স্কুলে পড়ছে। ভবিষ্যতে শিক্ষিকা হতে চায় সুস্মিতা। কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে সেই স্বপ্ন সে কতটা ছুঁতে পারবে, তা নিয়েই এখন চিন্তায় পরিবার।

সুস্মিতার কথায়, ‘গ্রামের রাস্তায় গাড়ি চলে না। সাইকেল নিয়ে স্কুলে যাতায়াত করি। মায়ের সঙ্গে অন্যের জমিতে কাজ করে পড়াশোনা ও সংসার খরচ চালাই। কাজে যাওয়ার আগে ও কাজ থেকে ফিরে পড়াশোনা করি। ভবিষ্যতে শিক্ষক হয়ে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে চাই।’ মা সিজলী পাহান বলেন, ‘প্রায় ১৪ বছর আগে ওর বাবা মারা গিয়েছেন। অন্যের জমিতে কাজের পাশাপাশি বাড়িতে হাঁস, মুরগি ও ছাগল পালন করে কিছুটা অর্থ উপার্জন হয়। তা দিয়ে দুই মেয়ের পড়াশোনা চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। উচ্চশিক্ষার খরচ অনেকটাই। কীভাবে মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করব, জানি না। সরকারি সাহায্য প্রয়োজন।’ এদিকে নালন্দা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক সৌমিত দাস জানান, পড়াশোনার প্রতি সুস্মিতার বরাবরই আগ্রহ। ছোট থেকে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে সে। ওর আরও সাফল্য কামনা করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *