বধ্যভূমি হয়ে উঠেছে দেশের ডবল ইঞ্জিন রাজ্য গুলি , ওড়িশার পর অসমেও ফের আক্রান্ত হল বাঙালি

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : শুধু ওড়িশা নয়। বাঙালির বধ্যভূমি হয়ে উঠছে ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলি! কারণ, এবার ঘটনাস্থল বিজেপি শাসিত অসম। অত্যাচারিত হল এক বাঙালি ফেরিওয়ালা। কাছাড় জেলার শিলচর হাসপাতাল রোডের সামনে এই নিগ্রহের ঘটনা ঘটে। মুর্শিদাবাদের সূতির নুরপুরের বাসিন্দা রিঙ্কু শেখের বাংলা উচ্চারণ শুনে বাংলাদেশি সন্দেহে প্রকাশ্য রাজপথে মারধর করে অসমের কিছু যুবক।

এদিকে শিলচরের রাঙিরখারি থানায় রিঙ্কু অভিযোগ দায়ের করে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার কাছে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান। তাঁর প্রশ্ন, ‘আমি ভারতীয় মুসলিম নাগরিক। মুসলিম হওয়াটাই কি আমার অপরাধ? নাকি কাজ করে খাই, এটা অপরাধ।’ এই ঘটনার পাশাপাশি সামশেরগঞ্জের উত্তর চাচণ্ডের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম ওড়িশার ঝাড়সুগুড়াতে হকারি করতে গিয়ে বিজেপি কর্মীদের হাতে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। তাঁকে দিয়ে জোর করে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেওয়ানো হয়। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়েছে। অসমে নিগৃহীত রিঙ্কু বলেন, ওইদিন রাতে সিভিল হাসপাতাল ট্রাফিক পয়েন্টের কাছে দু’জন অপরিচিত ব্যক্তি ‘বাংলাদেশি পেয়ে গিয়েছি’ বলতে বলতে আমাকে দাঁড় করায়। বাড়ি কোথায় জিজ্ঞেস করেই মারতে শুরু করে। বলে, আধার কার্ড দেখা। মুর্শিদাবাদে বাড়ি বলায় ওরা বলে ওঠে, তবে বাংলাদেশি। হামলাকারীরা ‘জয় শ্রীরাম’ বলে স্লোগান দিচ্ছিল। মুহূর্তে দশ-বারো জন জড়ো হয়ে যায়। ওরা আমার গোপনাঙ্গে, মুখে লাথি মারে। বাইক ছিনিয়ে নেয়। প্রাণ বাঁচাতে বাইক ফেলেই পালিয়ে যাই। অসমে বিভিন্ন জায়গায় এর আগেও বাংলাদেশি সন্দেহে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কাছাড় জেলায় বাংলাভাষীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। সেখানেও বাঙালি শ্রমিকদের মারধরের ঘটনায় ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়েছে। অভিযোগ, ধর্মের নামে এরকম ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটলেও পুলিশ নিষ্ক্রিয়। তাই এমন ঘটনা বেড়েই চলেছে।

এদিকে সামশেরগঞ্জের উত্তর চাচণ্ডের ১ বাসিন্দা ওড়িশার ঝাড়সুগুড়ায় ঘুরে ঘুরে পোশাক বিক্রি করেন। সেখানে স্থানীয় দুষ্কৃতীরা তাঁর পথে আটক ‘জয় শ্রীরাম’ এবং ‘গোমাতা কি জয়’ বলতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ। বলে, গো-হত্যা করে মাংস কেন খাওয়া হয়, তার জবাব চাই। ওই ফেরিওয়ালা গো-মাংস খান না বলে জানান। তবুও তাঁকে ছাড় দেয়নি হামলাকারীরা। বেশ কিছুক্ষণ হেনস্তার পর তাঁকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে। আতঙ্কে তিনি বাড়িতে ফিরছেন বলে জানা গিয়েছে।

রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক উন্নয়ন পর্যদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর কিছুদিন বাংলা ভাষাভাষীদের উপর অত্যাচার বন্ধ হয়েছিল। কিন্তু আবার আমাদের কাছে খবর আসছে, বিজেপি শাসিত ওড়িশা, অসমে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার হচ্ছে। বাংলায় কথা বললে, সেই ব্যক্তিকে মারবে কেন? এই অধিকার কে দিয়েছে?’ রাজ্যের বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী আখরুজ্জামান বলেন, ‘ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় একজন নাগরিকের যে কোনও রাজ্যে যাওয়ার অধিকার হাছে। বাংলার শ্রমিকরা কাজের সন্ধানে যাচ্ছেন। বিজেপি শাসিত ডবল ইঞ্জিন সরকারের রাজ্যগুলিতেই বাংলার শ্রমিকদের উপর অত্যাচার হচ্ছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *