মসজিদে ভাস্কর্য হিন্দু দেবদেবীর ! ASI-এর ভোজশালা সমীক্ষা রিপোর্ট চমকে দিল সকলকে

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : পরমারা রাজবংশের সময়ের মন্দিরগুলির অংশ ব্যবহার করে তৈরি হয়েছে ভোজশালার কামাল মওলা মসজিদের কাঠামো। ভোজশালা-কামাল মওলা মসজিদ চত্বরে গণেশ, ব্রহ্মা, নরসিংহ, ভৈরব এবং অন্যান্য হিন্দু দেবদেবীর বেশ ভাস্কর্য রয়েছে। পাওয়া গিয়েছে ব্যাসল্ট, মার্বেল, শিস্ট, নরম পাথর, বেলেপাথর এবং চুনাপাথরের তৈরি বেশ কয়েকটি হিন্দু দেবদেবীর প্রত্নবস্তুও। চমকে দিল আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন। সম্প্রতি এই প্রতিবেদনটি মধ্য প্রদেশ হাইকোর্টে জমা দিয়েছে এএসআই।

রিপোর্ট অনুযায়ী সমীক্ষা চলাকালীন, জটিল খোদাই করা ৯৪টি ভাস্কর্য, ভাস্কর্যের টুকরো, এবং স্থাপত্য উপাদান খুঁজে পেয়েছে এএসআই। সংস্কৃত ও প্রাকৃতে লেখা বেশ কিছু শিলালিপিও খুঁজে পাওয়ার গিয়েছে। এএসআই আরও জানিয়েছে, একটি বিশেষ শিলালিপিতে পরমার রাজবংশের রাজা নরবর্মণের উল্লেখ রয়েছে। জানালার ফ্রেমে খোদাই করা ছোট ছোট দেবতার মূর্তিও পাওয়া গিয়েছে। এই মূর্তিগুলির অবস্থা তুলনামূলকভাবে ভালো বলে জানিয়েছে এএসআই। সমীক্ষায় সিংহ, হাতি, ঘোড়া, কুকুর, বানর, সাপ, কচ্ছপ-সহ বেশ কিছু প্রাণীর ভাস্কর্যও পাওয়া গিয়েছে। মসজিদে বিভিন্ন পৌরাণিক মূর্তিও পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে এএসআই।

ভোজশালা-কামাল মওলা মসজিদটি মধ্য প্রদেশের ধার জেলায় অবস্থিত। এটি এএসআই সুরক্ষিত। তবে একাংশের হিন্দুদের দাবি, এই মসজিদটি আসলে দেবী সরস্বতীর একটি মন্দির ছিল। অর্থাৎ, জ্ঞানব্যাপী, মথুরার মতো এও এক মন্দির-মসজিদ বিতর্ক। চলতি বছরে এই বিতর্ক উচ্চ আদালতে পৌঁছেছে। এই বছর বসন্ত পঞ্চমী ছিল শুক্রবার। এমনিতে এএসআই এই বিতর্কিত স্থানে প্রতি মঙ্গলবার এবং বসন্ত পঞ্চমীর দিন পুজো-অর্চনা করার অনুমতি দেয় হিন্দুদের। একইসঙ্গে, প্রতি শুক্রবার এখানে নামাজ পড়ার অনুমতি দেওয়া হয় মুসলমানদের। এই বছর শুক্রবার বসন্ত পঞ্চমী পড়ায়, মুসলমানদের দুপুর ১টা থেকে ৩টের মধ্যে নামাজ পড়তে বলা হয়েছিল। আর বাকি সময় হিন্দুদের বসন্ত পঞ্চমীর পুজো করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে, হিন্দু পক্ষ তাতে রাজি হয়নি। গোটা দিনই বিতর্কিত স্থানের দখল চেয়েছিল তারা। সেখান থেকেই বিতর্ক গড়ায় আদালতে।

বেশ কিছু ঐতিহাসিক নথি এবং গবেষণাপত্র দিয়ে আবেদনকারীরা দাবি করেছিলেন, ভোজশালা কমপ্লেক্সে কামাল মওলা মসজিদের আগে বাগদেবীর মন্দির ছিল। হিন্দু মন্দিরের প্রাচীন কাঠামোটি ভেঙে ফেলে মসজিদটি তৈরি করা হয়েছিল। ১৩ শতকের শুরুতে, আলাউদ্দিন খিলজির আমলে এই মন্দির ভেঙে ফেলা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। পরবর্তীকালে, ১৫১৪ সালে দ্বিতীয় মেহমুদ খিলজির সময়ে কামাল মওলা মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল। যে রাজা নরবর্মণের কথা বলা হয়েছে এএসআই-এর প্রতিবেদনে, তিনি রাজত্ব করতেন ১০৯৪ থেকে ১১৩৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে।

গত মার্চ মাসে, মধ্য প্রদেশ হাইকোর্ট ভোজশালা-কামাল মওলা মসজিদ চত্বরে সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিল এএসআইকে। আদালত বলেছিল, ১৯৫৮ সালের মনুমেন্টস অ্যাক্টের ধারা অনুযায়ী, যে কোনও প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভের আসল চরিত্র নির্ধারণ করা এএসআই-এর বিধিবদ্ধ দায়িত্ব।

x

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *