মুসলিম প্রধান শিক্ষককে ফাঁসাতে বিষ প্রয়োগ স্কুলের ট্যাঙ্কে, কর্ণাটকের ঘটনায় ধরা পড়লো হিন্দুত্ববাদী নেতা সহ ৩ অভিযুক্ত

বাংলার খবর | বেস্ট কলকাতা নিউজ

বেস্ট কলকাতা নিউজ : অন্ধ ধর্মীয় বিদ্বেষের জের। ক্ষুদে স্কুল পড়ুয়াদের খাবার জলে বিষ মিশিয়ে দিতেও হাত কাঁপল না! সম্প্রতি কর্ণাটকের বেলাগাভি জেলার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মুসলিম। বিষয়টি আদৌ মেনে নিতে পারেনি স্থানীয় হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। প্রধান শিক্ষককে ফাঁসাতে স্কুলের জলের ট্যাঙ্কে মিশিয়ে দেওয়া হল বিষ। সেই জল খেয়ে অসুস্থ হয়ে হয়ে পড়ে ১২ জন পড়ুয়া। পরে এই চক্রান্ত ফাঁস হয়ে যায়। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত এক হিন্দুত্ববাদী নেতা সহ তিনজনকে।

বেলাগাভির হুলাকাত্তি গ্রামের সরকারি আপার প্রাইমারি বিদ্যালয়ের এই ঘটনায় তদন্ত করে পুলিস। জানা গিয়েছে, গত ১৩ বছর ধরে স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে রয়েছেন সুলেমান গোরিনায়েক। তা নিয়ে বরাবর আপত্তি ছিল হিন্দুত্ববাদী সংগঠন শ্রীরাম সেনার। সুলেমানকে বদলি করার চেষ্টাও কম হয়নি। কিন্তু কোনও সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ সহজ হয়নি। অভিযোগ, ওই সব চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় প্রধান শিক্ষককে ফাঁসাতে স্থানীয় হিন্দুত্বাবাদী নেতা সাগর পাতিল স্কুলের জলের ট্যাঙ্কে কীটনাশক মেশানোর ছক কষেন। সেজন্য নগদ ৫০০ টাকা, চকোলেট ও খাবারের টোপ দিয়ে তিনি স্কুলেরই কয়েকজন পড়ুয়াকে এই কাজে ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। ওই পড়ুয়ারা এর পরিণতির বিষয়টি বুঝতে না পেরে সাগরের নির্দেশ মতো কীটনাশক মেশানো নরম পানীয় স্কুলে নিয়ে যায়। তারপর সুযোগ বুঝে তা মিশিয়ে দেয় জলের ট্যাঙ্কে। সেই জল খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে অন্তত ১২ জন পড়ুয়া। তাদের মধ্যে ১১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।

এদিকে বিষক্রিয়ায় পড়ুয়াদের অসুস্থতার বিষয়টি জানতে পেরে তদন্তে নামে পুলিস। আর এতেই সাগরের চক্রান্তের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এই বিপজ্জনক চক্রান্তে সাগরকে তার দুই শাগরেদ সাহায্য করেছিল বলে অভিযোগ ওঠে। ওই তিনজনকেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। পুলিস জানিয়েছে, প্রধান শিক্ষককে বিপাকে ফেলতেই এই ছক কষেছিল অভিযুক্তরা। এই ঘটনায় গভীর উদ্বিগ্ন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া। তিনি এজন্য শ্রীরাম সেনার পাশাপাশি বিজেপিকেও নিশানা করেছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপের জন্য পুলিসেরও প্রশংসা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *