শ্যামনগরের ‘ভগবান’, বিদায় নিলেন করোনায়, স্থানীয়রাই মেটালেন হাসপাতালের ১৫ লক্ষের বিল
বেস্ট কলকাতা নিউজ : লড়াই শেষ মাস খানেকের। উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরের করোনা যোদ্ধা ডঃ প্রদীপ ভট্টাচার্য্য অবশেষে পুষ্প বৃষ্টির মধ্যে দিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। এই ঘটনায় একরকম শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা শ্যামনগর জুড়ে। তাঁকে ভগবান হিসেবেই দেখতেন শ্যামনগরের সাধারন মানুষজন।
আমাদের রাজ্যে সর্বত্রই লকডাউন হয়েছে করোনা থাবা বসানোর পর থেকেই। কিন্তু ডঃ প্রদীপ ভট্টাচার্য এই পরিস্থিতিতেও কোনওদিনই চিকিৎসা না করে ফিরিয়ে দেননি কোনও রোগীকেই। আর নিজেই করোনা রোগে আক্রান্ত হয়ে পরেন চিকিৎসা করতে করতেই। প্রথম তাঁর করোনা উপসর্গ লক্ষ্য করা যায় গত ৮ জুলাই। ১৩ জুলাই পজিটিভ আসে তাঁর করোনা রিপোর্ট। এরপরই তাঁকে ভর্তি করা হয় মুকুন্দপুরে এক বেসরকরি হাসপাতালে। সেই থেকেই তিনি লড়াই করে যাচ্ছিলেন করোনা ভাইরাসের সঙ্গে। এর মাঝেই করোনা আক্রান্ত হন ডাক্তার বাবুর স্ত্রী ও ছেলেও।
তবে তাঁরা বাড়ি ফিরে আসেন করোনা মুক্ত হয়ে।কিন্তু তিনি ফের হৃদরোগে আক্রান্ত হন গত ১ আগস্ট।এরপর থেকে আরও সংকট জনক হয়ে যায় তাঁর শারীরিক অবস্থা। প্রয়োজন হয়ে পরে প্রচুর অর্থের। আর সেই অবস্থায় শ্যামনগরের বাসিন্দারা এগিয়ে আসেন নিজেদের “ভগবান” ডাক্তার বাবুকে সুস্থ করে তোলার জন্য। তাঁরা নিজেদের উদ্যোগে চাঁদা তুলে সংগ্রহ করতে থাকেন ডাক্তারবাবুর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় বিপুল অর্থ।
সেই সঙ্গে প্রার্থনাও চলতে থাকে ডাক্তার বাবুর মঙ্গল কামনায়ও। কিন্তু সব কিছুর অবসান ঘটিয়ে শ্যামনগরের ভগবান তথা করোনা যোদ্ধা ডাক্তার প্রদীপ ভট্টাচার্যের মৃত্যু হয় গত ১০ আগস্ট বিকেলে। আর ডাক্তার বাবুর মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই গোটা শ্যামনগর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। শেষবারের মতো সকলেই চোখের দেখা দেখতে চাইছিলেন মৃত ডাক্তারবাবুরকে। তাই ডাক্তার বাবুর চিকিৎসার জন্য স্থানীয়দের পক্ষ থেকে যে টাকা চাঁদা হিসেবে তোলা হয়েছিল সেই টাকা ও ডাক্তার বাবুর পরিবারের তরফ থেকে দেওয়া টাকা মিলিয়ে বেসরকারি হাসপাতালের বিল বাবদ প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে শেষ বারের জন্য শ্যামনগরে নিয়ে আসা হয় ডাক্তার প্রদীপ ভট্টাচার্য মরদেহ।