সিকিমের বাসিন্দা সেরিং লেপচা এক অভাবনীয় নজির গড়লেন বাজরা চাষ করে
নিজস্ব সংবাদদাতা : ভারতের প্রস্তাব মেনে ২০২৩ সালকে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার অফ মিলেটস’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল রাষ্ট্রসংঘ। মিলেট অর্থাৎ বাজরার গুণাগুণ এবং এই শস্য চাষের প্রয়োজনীয়তা বারবার শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গলায়।
তঁারই আবেদনে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির বাজরা চাষ করছেন উত্তর সিকিমের জংগু-র বাসিন্দা শেরিং গ্যাতসো লেপচা। পাহাড়ি রাজ্যে অর্গানিক পদ্ধতিতে উৎপাদিত বাজরা নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় প্রচারে যান ‘সিকিমের মিলেটম্যান’। একাধিক ট্যুরিজম ফেস্টিভালে শস্যটির গুণাবলি সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করেছেন তিনি। ফক্সটেল, ফিঙ্গার, স্মল, হোয়াইট সহ আট রকমের বাজরা চাষ করেন নিজে। পাশাপাশি স্থানীয়দের অনেককে হাতেকলমে চাষের পদ্ধতি শিখিয়ে স্বনির্ভর করে তুলেছেন তিনি। শেরিংয়ের কথায়, ‘প্রায় কুড়ি বছর ধরে চাষবাসের সঙ্গে জড়িত আমি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বাজরার গুণাগুণের প্রচার চালাচ্ছেন। সিকিমের বিভিন্ন জায়গায় পর্যটকদের এখন বাজরার তৈরি খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। এখানকার বাজরার প্রচারের জন্য সরকারি তরফে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
শেরিং বিভিন্ন প্রকারের বাজরার বীজ সংরক্ষণ করে সিকিমের মাটিতে জৈব পদ্ধতি চাষ করছেন। সেখানকার বাজরা কতটা পুষ্টিকর, সেই তথ্য পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে উদ্যোগী তিনি। আরও বেশি সংখ্যক স্থানীয়রা যাতে এই চাষে আগ্রহী হয়ে উঠতে পারেন, সেই চেষ্টাও চালাচ্ছেন। তঁার সম্পর্কে পর্যটন ব্যবসায়ী রাজ বসু বলেছেন, ‘শুধুমাত্র সিকিমের বাজরার প্রচার নয়, স্থানীয়দের আয়ের নয়া দিশাও দেখিয়েছেন শেরিং লেপচা। তঁাকে দেখে অনেকে এই শস্য চাষ করছেন।’
জৈব পদ্ধতিতে বাজরা চাষের জন্য সিকিমের হোলিস্টিক হেলথ অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের তরফে সম্মানিত করা হয়েছে শেরিংকে। ‘সিকিমের মিলেটম্যান’ জানালেন, প্যানকেক থেকে পিৎজার পাশাপাশি লেপচাদের ঐতিহ্যবাহী খাবারও এই শস্য দিয়ে তৈরি করা হয়। হোমস্টেতে সেসব পরিবেশন করা হচ্ছে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের। তাঁরা ওই খাবার খেতে পছন্দ করছেন। তাঁর ব্যাখ্যায়, ‘জৈব পদ্ধতিতে উৎপাদিত শস্যটি যাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, সেই চেষ্টা চালাচ্ছি।