১৮৯ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু, এদিকে নেই’ কোনো ‘উপযুক্ত প্রমাণ! অবশেষে মুম্বই ট্রেন হামলার ১২ দোষীকেই মুক্তি দিল বোম্বে হাইকোর্ট
মুম্বই ট্রেনের বিস্ফোরণের মামলায় বেকসুর খালাস সব অভিযুক্ত। ২০০৬ সালে মুম্বইয়ে ট্রেনে যে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল, তাতে প্রাণ গিয়েছিল ১৮৯ জনের। আহত হয়েছিলেন ৮০০-রও বেশি মানুষ। ওই বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছিল ১২ জনকে। কিন্তু উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে তাদের সকলকেই মুক্তি দিল বম্বে হাই কোর্ট। ২০১৫ সালে নিম্ন আদালত ওই ১২ জন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল। ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও বাকিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালে মৃত্যু হয়েছে এক অভিযুক্তের।

অভিযুক্তরা নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। আজ বিচারপতি অনিল কিলোর ও বিচারপতি শ্যাম চন্দক দোষীদের মুক্তির রায় দেন। তাঁদের বিরুদ্ধে অন্য কোনও মামলা না থাকলে, অভিযুক্তদের জেল থেকে মুক্তি দিতে বলা হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পেশ করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেই জানিয়েছে হাইকোর্ট। বেঞ্চের তরফে বলা হয়, “প্রসিকিউশন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এটা বিশ্বাস করাই যাচ্ছে না যে অভিযুক্তরা অপরাধ করেছে। তাই সাজা খারিজ করে দেওয়া হল।”
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান নিয়েও প্রশ্ন তোলে হাইকোর্ট। বিস্ফোরণের ১০০ দিন পর অভিযুক্তের মুখ মনে রাখা সম্ভব নয় বলেই জানায় আদালত। তদন্তে নেমে যে বিস্ফোরক, অস্ত্রশস্ত্র ও ম্যাপ উদ্ধার করা হয়েছিল, তাও বিস্ফোরণের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বলেই জানানো হয় হাই কোর্টের তরফে। ট্রেন বিস্ফোরণে কী ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল, তাও প্রমাণ করা যায়নি।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের ১১ জুলাই মুম্বই লোকাল ট্রেনে পরপর ৭টি বিস্ফোরণ হয় ১১ মিনিটের ব্যবধানে। বিস্ফোরণের মাত্রা বাড়াতে প্রেসার কুকার ব্যবহার করা হয়েছিল। প্রথম বিস্ফোরণটি হয়েছিল সন্ধ্যা ৬টা ২৪ মিনিটে। তার কয়েক মিনিট পর, ৬টা ৩৫ মিনিটে দ্বিতীয় বিস্ফোরণ হয়। চার্চগেট থেকে আসা লোকাল ট্রেনের ফার্স্ট ক্লাস কম্পার্টমেন্টে বোমাগুলি রাখাছিল। মাটুঙ্গা রোড, মাহিম জংশন, বান্দ্রা, খার রোড, যোগেশ্বরী, ভয়ন্ডর ও বোরিভলি স্টেশনের কাছে পরপর বিস্ফোরণ হয়।