পূর্ব কলকাতা জলাভূমির আন্তর্জাতিক মর্যাদা হারানোর আশঙ্কা বেআইনি দখলদারির দাপটে
বেস্ট কলকাতা নিউজ : তার আন্তর্জাতিক মর্যাদা কি ধরে রাখতে পারবে আন্তর্জাতিক গুরুত্বসম্পন্ন এবং ‘রামসার তালিকা’ভুক্ত পূর্ব কলকাতা জলাভূমি?— রাজ্যের পরিবেশবিদদের একাংশের মধ্যে আপাতত দানা বেঁধেছে এমনি এক আশঙ্কা । কারণ, ওই এলাকায় একের পর এক বেআইনি নির্মাণ হয়েই চলেছে জলাভূমি ভরাট রোধ নিয়ে রাজ্য সরকারের হাজারো প্রচারের পরেও। যার সাম্প্রতিক সংযোজন হল , গত ফেব্রুয়ারিতে একটি বহুতল নির্মাণ কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার অধীনস্থ এলাকায়। যদিও রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী এবং ‘ইস্ট কলকাতা ওয়েটল্যান্ডস ম্যানেজমেন্ট অথরিটি’-র (ইকেডব্লিউএমএ) চেয়ারপার্সন রত্না দে নাগ বলছেন, ”আমরাও খবর পাচ্ছি, ওখানে বেআইনি দখলদারির ঘটনা ঘটছে। তবে রাজ্য সরকার বদ্ধপরিকর রামসার সাইটের মর্যাদা রক্ষার ক্ষেত্রে।”
কিন্তু তাতেও আশঙ্কার মেঘ কাটছে না পরিবেশবিদ মহলের। কারণ, একটি উড়ালপুল তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে ওই এলাকায়।ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে পরিকল্পনার পরিবেশগত ছাড়পত্র পাওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ। কেএমডিএ রয়েছে যার দায়িত্বে। রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ”রামসার সাইট সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল। কিন্তু সব কাজ হবে পরিবেশের স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখেই। প্রস্তাব তৈরি হচ্ছে এমনকি সেই মতোই।”
এদিকে প্রশাসন সূত্রের আরও খবর, শোভন চট্টোপাধ্যায় পরিবেশমন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র থাকাকালীন এই উড়ালপুলের পরিকল্পনা শুরু হয় ২০১৭ সালে। নবান্নে পুনর্গঠিত ইকেডব্লিউএমএ কমিটির প্রথম বৈঠকে উড়ালপুল নির্মাণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই বছরের জুলাইয়ে। একই সঙ্গে বলা হয়, বিচক্ষণতার সঙ্গে ব্যবহার করা হবে জলাভূমির স্থলভাগের অংশের জমিও। এর জন্য দরকারে পরিবর্তন করা হবে আইনও। সব ক্ষেত্রে যুক্তি একটাই, ‘জনস্বার্থ’। কিন্তু সে সময়ে তুমুল বিতর্ক হয় ‘জনস্বার্থ’-র অজুহাতে ওই এলাকা আসলে প্রোমোটারদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে কি না, তা নিয়েও। তার পরেও অবশ্য ঠান্ডা ঘরে চলে যায়নি উড়ালপুলের পরিকল্পনা। প্রশাসন সূত্রের খবর, যাত্রাপথের পরিকল্পনা করা হয়েছে ২০১৭ সালে প্রস্তাবিত উড়ালপুলের নকশার পরিবর্তে একটি নতুন উড়ালপুলের। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ”ঘটনাচক্রে, সেটি সিংহভাগই মিলে গিয়েছে আগের উড়ালপুলের যাত্রাপথের সঙ্গে।”