কৃষক ও খেতমজুদের সর্বভারতীয় আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করলো সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা
দিল্লি, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৩: আজ দিল্লিতে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার জাতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয় যেখানে ২০০ জনের বেশি কৃষক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিস্তারিত আলাপ আলোচনার পর জাতীয় সভায় নিম্নলিখিত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়:
১) এমএসপি আইনের দাবি, ঋণ মুক্তি, কৃষক ও খেতমজুদের পেনশন, সঠিক ও কার্যকরী ফসল বিমা, কৃষক হত্যাকারীর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রর গ্রেপ্তারি, কৃষকদের উপর মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, শহীদ কৃষক পরিবারদের ক্ষতিপূরণ ইত্যাদির মূল বিষয়গুলিতে, ২৬ থেকে ৩১ মে, ২০২৩, ভারতের সমস্ত রাজ্যে বিক্ষোভ ও আন্দোলন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে দেশের সমস্ত সংসদ সদস্য এবং প্রধান রাজনৈতিক নেতাদের নিজ নির্বাচনী এলাকায় কৃষকদের বিশাল প্রতিবাদ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান। তাদের অবিলম্বে সমস্ত কৃষক খেতমজুদের দাবি সমাধান করার জন্য সতর্ক করা হবে এবং জানানো হবে যে তারা ব্যর্থ হলে আর প্রতিবাদের সম্মুখীন হতে হবে।
২) মে, জুন এবং জুলাই মাসে, ভারতের প্রতিটি রাজ্যে, জেলায় এবং ব্লকে কৃষকদের সংগঠিত করার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
৩) ১-১৫ আগস্টের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক কর্পোরেটদের কাছে কৃষক ও শ্রমিকদের স্বার্থ বিক্রি বন্ধ করার দাবিতে শ্রমিক ইউনিয়ন এবং সংগঠনগুলির সমন্বয়ে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত করবে।
৪) সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি, সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার জাতীয় নেতাদের নেতৃত্বে বিশাল সর্বভারতীয় যাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। যাত্রাগুলি বিশেষভাবে সেই রাজ্যগুলিতে যাবে যেখানে বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন, যেমন মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা ইত্যাদি।
৫) ৩ অক্টোবর, যেদিন বিজেপি নেতারা লখিমপুর খেরিতে কৃষকদের খুন করেছিল, সেদিন সর্বভারতীয় শহীদ দিবস অনুষ্ঠিত হবে।
৬) ২৬ নভেম্বর, যেদিন কৃষকদের ঐতিহাসিক দিল্লি চলো পদযাত্রা দিল্লির সীমানায় পৌঁছেছিল, সেদিন থেকে সমস্ত রাজ্যের রাজধানীতে কমপক্ষে ৩ দিন ব্যাপী দিবা-রাত্রি ধর্না প্রদর্শনের মাধ্যমে সর্বভারতীয় বিজয় দিবস উদযাপন করা হবে।
সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার জাতীয় সভায় আজ নিম্নলিখিত সিদ্ধান্তগুলিও গৃহীত হয়:
১) ভারতের মহিলা কুস্তিগীরেরা, যারা বিজেপি সাংসদ ব্রিজ ভূষণ শরণ সিংকে গ্রেপ্তারির দাবিতে দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্নায় বসেছেন, তাদের এই প্রতিবাদ কর্মসূচিকে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা দৃঢ়ভাবে সমর্থন জানাচ্ছে। এসকেএম ক্রীড়াবিদদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছে এবং অবিলম্বে বিজেপি সাংসদকে গ্রেপ্তারির দাবি জানাচ্ছে।
এসকেএম নেতাদের একটি পূর্ণ প্রতিনিধি দল বিক্ষোভস্থল ক্রীড়াবিদদের সাথে দেখা করে এবং তাদের সমর্থন জানায়।
২) সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্য পাল মালিকের বিরুদ্ধে বিজেপি সরকার দ্বারা CBI সহ অন্য কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে লেলিয়ে দেবার ঘোর নিন্দা জানাচ্ছে। শ্রী মালিক কৃষক আন্দোলন এবং সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার অবিচল সমর্থক ছিলেন৷ শ্রী মালিক পুলওয়ামায় সৈন্যদের অপ্রয়োজনীয় জীবনহানি, সর্বোচ্চ স্তরে বিজেপি নেতৃত্বের দুর্নীতি ইত্যাদির বিষয়ে বিজেপি সরকারের অপকর্মের কথা তুলে ধরেছেন এবং এসকেএম শ্রী মালিকের সাহসিকতার প্রশংসা করেছেন। এসকেএম শ্রী মালিককে বিরুদ্ধে বিজেপি সরকারের সব প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করার সমস্ত আন্দোলনকে সমর্থন করবে৷
৩) এসকেএম ভারতের ডাক কর্মীদের প্রাচীনতম ইউনিয়ন – ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ পোস্টাল এমপ্লয়িজ এবং অল ইন্ডিয়া পোস্টাল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন-কে কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক স্বীকৃতি প্রত্যাহারের ঘোর নিন্দা জানাচ্ছে। এই ইউনিয়নগুলি কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করেছিল এবং কৃষক সংগঠনগুলিকে কিছু তহবিল দান করেছিল বলে অভিযোগ এবং সম্ভবত সেই কারণেই সরকারের এই প্রতিহিংসামূলক আচরণ৷ সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা কৃষক বিরোধী ও শ্রমিক বিরোধী বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে শ্রমিক-কৃষক-খেতমজুদের ঐক্যর জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকবে।